৬ জুন থেকে ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান

SHARE

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে নগরবাসীর সুরক্ষায় ও এডিসের লার্ভা ধংশে আগামী ৬ জুন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রতিটি ওয়ার্ডে বিশেষ (চিরুনি) অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসির প্রথম কর্পোরেশন সভায় তিনি একথা বলেছেন।

আজ বুধবার বেলা এগারটায় মিরপুর মাজার রোডে অবস্থিত ডিএনসিসির ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া যেন গত বছরের মতো ভয়াবহ রূপ নিতে না পারে সেইজন্য আমি আগে থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। ১০ মে থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ৪ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে। কোথাও জমে থাকা পানি বা এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেলে, সেটি যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানও হয়, সেখানে আইন অনুযায়ী অর্থদণ্ড বা কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আগামী ৬ জুন থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান শুরু করা হবে। অন্তত আগস্ট পর্যন্ত প্রতিমাসে ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।’ এসময় নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে বিনামূল্যে ডিএনসিসি এলাকার ৫টি নগর মাতৃসদন ও ২২টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১১ মে থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

মশক নিধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ইতিমধ্যে দুটি অ্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অ্যাপের মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার এডিস মশার লার্ভা পাওয়া সকল বাড়ি বা স্থাপনার ছবিসহ তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। যা পরবর্তীতে মনিটরিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হবে।

করোনা মোকাবেলা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘করোনাকালে ডিএনসিসি এক দিনের জন্যও বন্ধ থাকেনি। প্রতিদিন ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাছে। মেয়র পদে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে থেকেই এ মহাদুর্যোগের সময়ে আমিও নগরবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের পাশে থেকে তাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগানোর মাধ্যমে এবং ডিএনসিসির সাথে সমন্বয় করে আমি নগরবাসীর জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এই দুর্যোগের সময়ে নগরবাসীর জীবনযাপন স্বাভাবিক রাখতে আপনাদের সাথে নিয়ে এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।’

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বর্ষাকালে রাস্তায় যেন পানি না জমে সেই জন্য নগরীর ড্রেন, খাল পরিষ্কার এবং খনন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কালশি খাল খনন করা হয়েছে। আশকোনা এলাকায় সিভিল এভিয়েশনের এডি-৮ খাল খনন শুরু করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বনানী প্রধান সড়ক ও উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে।’

এ সময় প্রতি মাসে একবার ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে নগরবাসীর অভিযোগ, চাওয়া-পাওয়া, সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য তিনি কাউন্সিলরদের আহবান জানান তিনি।

এর আগে সভার শুরুতেই মৃত্যুবরণকারী সাবেক মেয়র আনিসুল হক, প্যানেল মেয়র ওসমান গণি এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।