ডলফিন রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

SHARE

চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধ, কার্প জাতীয় মা মাছ এবং জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে গত ২৪ মে মারা যাওয়া ডলফিন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে এ তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। হালদা নদীর ডলফিন রক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আব্দুল কাইয়ুম লিটনের করা রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনকারী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এর আগে গত ১২ মে একই আদালত হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে ডলফিন রক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে গত ১৯ মে একটি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ প্রতিবেদনের পর আদালত ওইদিনই একটি কমিটি গঠন করে দেন। ২৮ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল। এরইমধ্যে গত ২৪ মে আরো একটি ডলফিন মারা যায়। এ অবস্থায় আদালত এ আদেশ দেন।

হালদা নদীতে একের পর এক ডলফিন হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করে রিট আবেদন দাখিল করা হয়। এই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধ, কার্প জাতীয় মা মাছ এবং জীব বৈচিত্র রক্ষায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে প্রধান এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে কমিটি করে দেন।

কমিটিতে নদী তীরবর্তী সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টা রাখা হয়েছে। কমিটিতে জেলা পুলিশ সুপার, চট্টগ্রামের নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা মৎস কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, রাউজান, রামগড় ও মানিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসকের মনোনীত দুইজন হালদা গবেষক ও দুইজন এনজিও প্রতিনিধি, নদী তীরবর্তী উপজেলা চেয়ারম্যানদের সদস্য রাখা হয়েছে।

ডলফিন হত্যার বিষয়ে ১০ মে একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকের অনলাইনে (বাংলা ভার্সন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএনডিপির সহায়তায় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হালদা নদীতে ডলফিন বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করা হয়। ওই জরিপের তথ্য অনুযায়ী, হালদা নদীতে পঁয়তাল্লিশটি ডলফিন রয়েছে। ওই জরিপে আরো বলা হয়, এরইমধ্যে হত্যা করা হয়েছে ২৪টি ডলফিন। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এভাবে ডলফিন হত্যা হলে ২০২২ সালের মধ্যে হালদা নদী ডলফিন শূন্য হয়ে পড়বে। বিলুপ্ত হয়ে যাবে বিপন্ন প্রজাতির এই ডলফিন।