করোনার সম্ভাব্য টিকার ৩০ কোটি ডোজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে আমেরিকা!

SHARE

বিশ্বজুড়ে প্রলয় সৃষ্টিকারী আণুবীক্ষণিক জীব নভেল করোনাভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে আমেরিকা। করোনার থাবায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষের। আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একটি ভ্যাকসিনের জন্য হন্যে হয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটি।

করোনার চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের প্রস্তুতকৃত পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের ৩০ কোটি ডোজ পেতে এরই মধ্যে চুক্তি করেছে আমেরিকা। ব্রিটিশ আস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির সম্ভাব্য এই করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম দফার ১০০ কোটি ডোজের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই পাবে দেশটি। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র কম্পানিটিকে ১২০ কোটি ডলার দেবে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ভ্যাকসিন উদ্ভাবিত হয়নি। সবগুলোই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তবে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলো নিয়েই বিশ্বনেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন বা ওষুধ ব্যতিত করোনায় থমকে যাওয়া অর্থনীতি সচল করা সম্ভব নয়। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনার টিকা দাবি করার পর দেশটির স্বাস্থ্য ও মানবসেবা (এইচএসএস) কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের ওষুধ নির্মার্তা প্রতিষ্ঠান আস্ট্রাজেনেকাকে ১২০ কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৩০ কোটি ডোজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে।

বৃহস্পতিবার আস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ভ্যাকসিন ও ওষুধ নিয়ে অনেক কাজ করছে তার প্রশাসন। আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে বড় ধরণের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলেক্স আজার বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে একটি নিরাপদ, কার্যকর ও ব্যাপকভাবে প্রাপ্ত করোনার টিকার জন্য আস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি অপারেশন ওয়ার্প স্পিডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এর আগে সম্ভাব্য এই টিকাটি চ্যাডওক্স এনকোভ-১৯ নামে পরিচিত ছিল। এখন এজেডডি১২২ বলে নামকরণ করা হয়েছে। টিকাটি উদ্ভাবন করেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও লাইসেন্স পেয়েছে আস্ট্রাজেনেকা। তবে এই টিকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনিশ্চিত, ফলে টিকার ব্যবহার কতটুকু কার্যকর হবে সেটা এখুনি বলা যাচ্ছে না।

আস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও করোনার টিকা নিয়ে কাজ করা অন্যান্য শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না ও সানোফি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোম্পানিটির এই চুক্তির ফলে টিকাটির পরীক্ষা তৃতীয় স্তরে প্রবেশ করবে। এতে করে দেশটির ৩০ হাজার মানুষের ওপর করোনা টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (মানবদেহে পরীক্ষা) হবে।

যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজভিত্তিক আস্ট্রাজেনেকা কম্পানি জানিয়েছে, এরই মধ্যে তারা ৪০ কোটি টিকার ডোজ বিক্রির চুক্তি সম্পন্ন করেছে এবং ১০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের সামর্থ্য রয়েছে তাদের। আগামী সেপ্টেম্বরে টিকার প্রথম চালান সরবরাহ শুরু হবে।

সূত্র- ভয়েস অব আমেরিকা, রয়টার্স।