হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল কয়েক দশক ধরে দ্বন্দ্বে লিপ্ত। তবে, গত অক্টোবর থেকে দুপক্ষ-ই একে অপরের ওপর তাদের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ বাড়িয়েছে। এই হামলার সূত্রপাত, ৭ অক্টোবর, যখন ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস হামলা চালায়। এরপরই শুরু হয় যুদ্ধ।
গত সপ্তাহে, লেবাননের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের এ ঘটনায়, লেবাননে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে, যাদের মধ্যে হিজবুল্লাহর অন্তত ১৬ সদস্য রয়েছেন। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে হিজবুল্লাহ। মূলত, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সংঘাত ভয়াবহ রূপ নেয়।
প্রকৃতপক্ষে, হিজবুল্লাহ, তেহরানের নেতৃত্বাধীন একটি জোটের অংশ যারা ইয়েমেন, সিরিয়া, গাজা এবং ইরাকে বিস্তৃত। হামাসের সাথে যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে ইসরায়েল এবং তার মিত্রদের আক্রমণ করেছে হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি বলেছে যে যতদিন গাজায় যুদ্ধ চলবে, ততদিন তারা ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাবে।
দুই দেশের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এই অঞ্চলটিকে আবারও সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। গত এক বছর ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধের মধ্যে, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ’র মধ্যে সবচেয়ে তীব্র গুলি বিনিময় দেখা যায়। কারণ লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে পূর্বের তুলনায় আরও জোরালোভাবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
হিজবুল্লাহ হামলার কারণে উচ্ছেদ হওয়ার পর, উত্তর সীমান্তের কাছে বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলি বাসিন্দাদের তাদের বাড়িঘর ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নতুন একটি যুদ্ধের লক্ষ্য তৈরি করে ইসরায়েল।
গত সোমবার, দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে ইসরায়েল উত্তরে ‘নিরাপত্তা ভারসাম্য’ পরিবর্তন হচ্ছে। সেই সাথে, ইসরায়েলের শহরে নাগরিকদের লক্ষ্য করে হাজার হাজার রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র চালানো হচ্ছে। তাই, দ্রুত-ই লেবাননে আক্রমণ করা হবে।
সেই ধারাবাহিকতায়, পেজার বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই, স্থানীয় সময় সোমবার, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় একাধিক শহরে একযোগে বিমান হামলা চালালো ইসরায়েলি বাহিনী।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২। যাদের মধ্যে ৩৫জন শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৫ জন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ২৪ ঘণ্টায় লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রায় ১৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে সাড়ে ছয়শোটিরও বেশি হামলা চালিয়েছে তেল আবিব।