পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা আর সবার বাসস্থান নিশ্চিতে রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্লট বরাদ্দ দেয় রাজউক। এসব প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে মানতে হয় নির্দিষ্ট নীতিমালা। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্লট বরাদ্দের ক্ষমতা সংরক্ষিত থাকে সরকারের হাতে। আর এ নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়িচালক, মন্ত্রী- এমপি, আমলাসহ নিজেদের পছন্দসই ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয় প্লট। রাজউক থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত কয়েক বছরে পূর্বাচল, ঝিলমিলসহ চারটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই হাজার প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। যার মধ্যে শুধু পূর্বাচলেই প্রায় এক হাজার প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে।
সংরক্ষিত কোটায় প্লট বরাদ্দের কোনো এখতিয়ার নেই রাজউকের, এমনটি বলেন প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। পুরো প্রক্রিয়াটি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী হয়েছে বলেও দাবি রাজউকের।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন,
সরাকারের একটা বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। সেই বিশেষ ক্ষমতাবলে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দিতে পারে। সেটা প্লট বরাদ্দ বিধিমালাতেই রয়েছে। সেই এখতিয়ার কেবল সরকারের। এখানে রাজউক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পছন্দ করার কোনো এখতিয়ারই নেই।
এ ধরণের প্লট বরাদ্দে রাজউকের নীতিমালার সংস্কার প্রয়োজন উল্লেখ করে নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পছন্দসই ব্যক্তির নামে প্লট বরাদ্দ দেয়া নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহার ও বেআইনি।
এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহম্মদ খান বলেন,
রাজউকে সংরক্ষিত কোটা নামে একটা ব্যবস্থা আছে। এতে ১০ শতাংশ প্লট বরাদ্দ দেয়ার সুযোগ ছিল। এই কোটার অপব্যবহার হয়েছে। রাজউকের যে আইন সেটা হচ্ছে, ঢাকা শহরে আপনার কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট থাকলে এই ধরনের প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ দেয়ার বিধান নেই। পুরো বিষয়টাই তৈরি করা হয়েছিল, কাউকে খুশি করার জন্য।
২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বরাদ্দ হওয়া ২৮৫ প্লটের ১৪৯টিই বরাদ্দ পান তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি, দলীয় নেতাকর্মী ও উচ্চ পর্যায়ের আমলারা। ইতোমধ্যে পূর্বাচলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের নামে বরাদ্দ ৬০ কাঠা জমির বরাদ্দ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।