পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের উদ্যোগে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’

SHARE

সকল ত্যাগে পল্লী বিদ্যুৎ রাখিব সচল’ এ স্লোগানে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলমান পরিস্থিতি, সেচ মৌসুম, গ্রীষ্মের তাপদাহ, মাহে রমজান এবং ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম বিবেচনা করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য গত ১৩ এপ্রিল থেকে এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, চিকিত্সাকেন্দ্র, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সেন্টার ইত্যাদিসহ দেশের ২ কোটি ৮৫ লাখ গ্রাহক এবং ১২ কোটির বেশি মানুষের ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে এ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কার্যক্রমের সঙ্গে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মকর্মচারীদের জন্য পাঁচটি প্রণোদনার ব্যবস্থা করছেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষ ঘরে অবস্থান করছে। চলমান সেচ মৌসুম, সামনে রমজান ও বৈরী আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কার্যক্রম শুরু করেছি। এ কার্যক্রমে যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী মাঠে কাজ করছে তাদের জন্য শতভাগ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। আগামী এক মাসের সম্ভাব্য চাহিদা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় মালামাল যেমন- ট্রান্সফরমার, ফিউজ লিংক, তার, সার্ভিস ড্রপ, জয়েন্ট স্লিভ, কানেক্টর, পোল ইত্যাদি আগামী ১৮ এপ্রিলের মধ্যে সকল অভিযোগ কেন্দ্রে পৌছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা এ কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে, তাদেরকে পাঁচটি প্রণোদনা দেওয়ার ব্যাপারেও বিবেচনা করছি।

প্রণোদনাগুলো হলো- এ কার্যক্রমে নিয়োজিতদের প্রমোশনের ব্যবস্থা করা। এ কাজে থাকাকালীন কেউ যদি অসুস্থ হয় তাদের সব ব্যয় বহন করা ও যদি কোনো কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারী মারা যায় তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং তার পরিবারের একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা। প্রতি সমিতি থেকে একজন করে কর্মকর্তা ও পাঁচজন করে কর্মচারীকে তাদের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া। করোনা মহামারী শেষ হলে তাদের অতিরিক্ত সাত দিন ছুটি দেওয়া এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে গিয়ে যারা কাজ করছে তাদের সবাইকে দৈনিক দুর্যোগ ভাতা দেওয়া হবে। তবে এ ভাতাটি শুধু রমজান মাসের জন্য প্রযোজ্য হবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতায় ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২৭৬টি জোনাল অফিস, ১৪২টি সাব-জোনাল অফিস, ১১০টি এরিয়া অফিস ও ১০১৬টি অভিযোগ কেন্দ্র মিলে ১৬২৪টি অফিসের মাধ্যমে দুই কোটি ৮৫ লাখ গ্রাহককে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে আবির্ভুত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশেও বিস্তৃত হচ্ছে। এ বিস্তৃতি প্রতিরোধের জন্য সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং চলাচল ও গমনাগমণে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গের চিকিত্সা সেবা প্রদান, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিবর্গের অবস্থান আরামদায়ক করা, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য সেচ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা, শিক্ষার্থীদের লেখাপাড়া এবং গ্রীষ্মের এ দিনে রোযাদারদের সিয়াম সাধনা আরামদায়ক এবং স্বস্তিদায়ক করার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান।