ঢাকার নারী বিচারককে আপিল বিভাগে তলব

SHARE

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে তলব করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ থাকার পরও ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন দেওয়ায় তাকে তলব করা হয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল সকাল ৯টার মধ্যে তাকে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মামলার আসামি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলার সাবেক অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক আসলাম সিকদারের জামিন বাতিল করা হয়েছে। তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি আজ বলেন, আপিল বিভাগের আদেশ থাকার পরও আসামিকে জামিন দেওয়া আদালত অবমাননার সামিল। এভাবে আদেশ দেওয়া হলে নিম্ন আদালতে শৃঙ্খলা থাকে না। এসময় আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান মোহন উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হাতিরঝিল থানায় ধর্ষণের অভিযোগে আসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় ওইদিনই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে একইবছরের ১৪ নভেম্বর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর গতবছর ৬ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয় ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। এ অবস্থায় আসামির আবেদনে হাইকোর্ট গতবছর ১৮ জুন তাকে জামিন দেন। এই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির কাছে আবেদন করে। এ আবেদনে চেম্বার জজ আদালত ২৫ জুন জামিন স্থগিত করেন। পরবর্তীতে এই স্থগিতাদেশ বাড়ানোর জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদন বিচারাধীন। এ অবস্থায় গত ২ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামি আসলাম সিকদারকে জামিন দেয়। এই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ এ আবেদনের ওপর শুনানিকালে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আজ এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হয়। শুনানিকালে আদালত তাৎক্ষনিকভাবে মামলার নথি তলব করেন। এরপর বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে নিম্ন আদালত থেকে মামলার নথি আনা হয়। নথি আসার পর তা পর্যালোচনা করেন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা। এরপর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, এ মামলায় ট্রাইব্যুনাল গতবছর ১১ মার্চ ওই আসামির জামিনের আবেদন খারিজ করে। এরপর আসামি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে ৪ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় নিম্ন আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ৩০ জানুয়ারি দিন রাখা হয়। কিন্তু রায় ঘোষনার আগেই বিচারক বদল হয়। নতুন বিচারক হিসেবে বেগম মোছা. কামরুন্নাহার গত ২৮ জানুয়ারি যোগ দেন। নতুন বিচারক আসায় নতুন করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ২ মার্চ দিন রাখা হয়। নির্ধারিত দিনে মামলার বাদীর আবেদনে আবারও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১২ এপ্রিল দিন রাখা হয়েছে। ওদিকে আসামির আবেদনে গত ২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল তাকে জামিন দেন। এই জামিনের বিরুদ্ধে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।