মাঠা

SHARE

matha-online-dhaka-comএটি দুগ্ধজাত একটি সুস্বাদু পানীয়। মাঠা তৈরীতে প্রয়োজন হয় দুধ, চিনি (পরিমানমতো), লবন (স্বাদমতো), আমন্ড, পেস্তা বাদাম বাটা, পাতিলেবুর রস। দুধ ভালো করে ঘুটে ননি (মাখন) তুলে নিয়ে অন্যান্য উপকরনসমূহ প্রয়োজনমত দিয়ে বরফকুচির সাথে পরিবেশ করতে হয়। তবে আজকাল আর সেই আয়োজন দেখা যায় না। এতো কিছু না দিয়ে সামান্য উপকরন দিয়ে মাঠা তৈরী করা হয়।

পুরনো ঢাকায় শাখারি বাজার সুস্বাদু ছানা-মাঠার জন্য বিখ্যাত। শাখারী বাজার পুলিশ ফাড়ির সামনে এবং স্বর্ণমন্দিরের আশেপাশে রাস্তার মোড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশেষ প্রক্রিয়া এই ছানা মাঠা তৈরি করে থাকে। এছাড়া পুরনো ঢাকার অনেক এলাকায় ছানা-মাঠা পাওয়া যায়। বিশেষ করে সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে মাঠা বিক্রি শেষ হয়ে যায়। তাই দিনের অন্যান্য ভাগে ছানা-মাঠা পাওয়া যায় না। ইসলামপুর, লক্ষ্মীবাজার, একরামপুর, নবাবপুর, চকবাজার, লালবাগ, উর্দ্দু রোড, আমলিগোলা, জিন্দাবাহার, ওয়ারী, কায়েতটুলি, নাজিরাবাজার, নারিন্দা, নাজিমুদ্দিন রোড, চাঁনখারপুল ইত্যাদি এলাকায় ছানা-মাঠা পাওয়া যায়। এখানে মাঠার সাথে ছানাও বিক্রি হয়। এটা মিষ্টির দোকানের ছানা থেকে পৃথক। কাঁচা ছানা। বেশ উপাদেয় এবং স্বাস্থ্যকর। মেদ-ভুড়ি কমাতে এই ছানা বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। সকালে খালি পেতে ছানা মাঠা খাওয়া উত্তম।

পুরনো ঢাকার তৈরী মাঠা সুস্বাদু হওয়ার কারনে এর চাহিদা এখন ঢাকার অন্যান্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এখনও পুরনো ঢাকায় সকালের দিকে গেলে দেখা যায় মাঠা বিক্রি করতে। এখানে প্রতি গ্লাস বিক্রয় ১০ টাকা।

তবে দু:খের বিষয় যে, বর্তমানে মাঠার ক্রমবর্ধমান চাহিদা দেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় মাঠা তৈরীর কারখানা গড়ে তুলেছে। প্রথমদিকে এসকল কারখানার তৈরীকৃত মাঠা মানুষ ক্রয় করলেও এখন এই মাঠা পাওয়া যায় না। মাঠা গাঢ় করতে এখান টয়লেট পেপারের মিশ্রন মেশানো হয়। খবরটা জানাজানি হয়ে যাওয়ার কারনে এখান এসব কারখানার তৈরী মাঠা পাওয়া যায়না।

তাই বিশুদ্ধ এবং সুস্বাদু মাঠার জন্য পুরনো ঢাকায় আসতে হবে। আধুনিক ঢাকায় বসবাসকারী অনেক লোক হয়ত জানেনা এই সুস্বাদু এবং উপাদেয় ছানা-মাঠার কথা। কিন্তু তাদের জানা উচিত যে, পুরনো ঢাকায় সেই আদিকাল থেকে বিশুদ্ধ এবং সুস্বাদু মাঠা তৈরী এবং বিক্রির রেওয়াজ এখনো রয়ে গেছে। এখানে গরুর খাটি দুধের তৈরী মাখন পাওয়া যায়।