ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনকে সরিয়ে নতুন মেয়র প্রার্থী হিসেবে ফজলে নুর তাপসের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। তাপসের মনোনয়ন সংগ্রহের একদিন পরই বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডি কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেন সাঈদ খোকন। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আজকে রাজনীতিতে আমার জন্য একটু কঠিন সময় যাচ্ছে। এ কঠিন সময়ে প্রিয় দেশবাসী, ঢাকাবাসী আমার জন্য দোয়া করবেন।
গত সাড়ে চার বছরে ঢাকা শহরের ইতিবাচক পরিবর্তনের দাবি করে সাঈদ খোকন বলেন, আমি অনেক কাজ করেছি। কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। আমি যেন বাকি কাজগুলো শেষ করতে যেতে পারি। আজকে ঢাকাবাসীর কাছে দোয়া চাই এবং বলতে চাই- আমি কখনও কর্তব্যে অবহেলা করিনি।
আগেই ধারণা করা হচ্ছিল এবার দক্ষিণ সিটিতে নতুন মুখ দেবে আওয়ামী লীগ। আর তাপস যেহেতু মনোনয়ন তুলেছেন হিসাবের পাল্লাটা তার দিকেই ভারি থাকতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাঈদ খোকনের হাতে নৌকার বৈঠা দেওয়া হয়নি।
তবে কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করছেন, ঢাকাবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারা, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা উন্নয়ন না করা এবং বিশেষত কয়েক মাস আগে মহামারি ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে অপ্রত্যাশিত কিছু বক্তব্য তাকে মনোনয়ন বোর্ডের নজর থেকে কিছু দূরে ঠেলে দিয়েছে।
তবে সাঈদ খোকন নিজে বরাবরই দাবি করেছেন, মশা নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। সাড়ে তিন লাখ আক্রান্তের যে তথ্য এসেছে সেটি কাল্পনিক। এটা সম্পূর্ণভাবে কাল্পনিক, বিভ্রান্তিমূলক। ছেলে ধরা আর সাড়ে তিন লাখ ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য একই সূত্রে গাঁথা। তার এই বক্তব্যে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকাসহ সারাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত সাঈদ খোকন। তার বাবা মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র। রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে গত ২৫ জুলাই এক অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাকে ‘গুজব’ বলে মন্তব্য করেন মেয়র খোকন।
মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শুরু থেকেই নানা বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর আজিমপুরের পার্ল হারবাপল কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশের পাশে পাল্টা কর্মসূচি দেন সাঈদ খোকন। এমনকি আওয়ামী লীগের ওই সমাবেশের সামনে ট্রাকে করে সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলার ঘটনায় তাকেই দোষারোপ করা হয়। ওইসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও মেয়র খোকনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দলীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচিত হন।