৮ বছর পর আজ হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগের সম্মেলন

SHARE

দীর্ঘ ৮ বছর পর আজ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলন ঘিরে দুটি পক্ষের দ্বন্দ্ব ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কেননা ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে গিয়ে দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনেরও খবর শোনা যাচ্ছে। ফলে আজ রবিবার উপজেলা আ,লীগের সম্মেলন ঘিরে চলছে নানা সমীকরণ।

জানা গেছে, রবিবার বিকেলে হাতীবান্ধা সরকারি এসএস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আ. লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহাগ গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদের (সভাপতি/সম্পাদক) একটি পাচ্ছেন বলে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেলেও অপরটিতে কে আসছেন তা হয়তো সম্মেলন শেষে স্পষ্ট হবে।

এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আ. লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেন এমপি। এতে সভাপতিত্ব করবেন হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্বাস আলী।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর এই উপজেলার আ. লীগের কমিটি গঠন করা হয়।

তবে এবারের কমিটি গঠন ঘিরে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন ও তার বড় ছেলে উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান সোহাগ আর অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা আ. লীগের যুগ্ম সম্পাদক সারয়ার হায়াত খান ও উপজেলা আ. লীগের ‘সভাপতি’ বদিউজ্জামান ভেলু।

এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগ সভাপতি বদিউজ্জামান ভেলু বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোট করায় তার পরিবর্তে আব্বাস আলীকে হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

তবে কেন্দ্র থেকে চিঠি দিয়ে সকল বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী বিদ্রোহী প্রার্থীরা ওই নোটিশের লিখিত জবাবও দিয়েছেন ঠিকই। এরপর দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল বিদ্রোহী প্রার্থীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সে কারণে বদিউজ্জামান ভেলু এখনো উপজেলা আ. লীগের সভাপতি রয়েছেন বলে দাবি একাংশের।

তবে বদিউজ্জামান ভেলুকে উপজেলা আ. লীগের সভাপতি হিসেবে মানতে নারাজ কেউ কেউ। এ জন্য তাকে বাদ দিয়ে আ. লীগের অপর একটি একাংশ ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করেছেন।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা আ,লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান সোহাগ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা এ কাজটি (পাল্টাপাল্টি কমিটি) করতে চাচ্ছেন, তাদের কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী শর্তযুক্ত মাফ করেছেন। যারা একবার মাফ পায় তারা আবার ষড়যন্ত্র করে এটাই তার প্রমাণ’।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা আ. লীগের ‘সভাপতি’ বদিউজ্জামান ভেলু বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন করার পর থেকেই একটি পক্ষ আমাদের দলের কার্যক্রম চালাতে দিতেন না। দলীয় প্রধান আমাদের ক্ষমা করার পরও ওই পক্ষটি পাশ কাটিয়ে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে থাকে। তাই আমরাও পাল্টা কমিটি করেছি’।

একই কথা বলেন, উপজেলা আ. লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আ. লীগের যুগ্ম সম্পাদক সরওয়ার হায়াত খান বলেন, ‘আমরা কয়েক জন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আমাদেরকে দলীয় কাজ থেকে বাইরে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমরাও কমিটি গঠন করছি’।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন হাবিব খাঁন মানিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ইতিমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। রাত পোহালে আমাদের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে দলের সকল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।