শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

SHARE

tarek4বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন নিরিহ মানুষের বুকে গুলি চালাবেন না। এখনো সময় আছে জনগনের পক্ষে অবস্থান নিন। অবৈধ সরকারের অবৈধ নির্দেশ না মেনে বিবেককে জাগ্রত করুন। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা সফল না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

রবিবার ইস্ট লন্ডনের অট্রিয়াম অডিটোরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত গনতন্ত্র হত্যা ও কাল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি তৃনমূল নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক । বেগম খালেদা জিয়া আজ অবরুদ্ধ।

তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তোমাদের মায়ের মতো  তোমাদের কাছে আসতে পারছেন না । তোমাদেরকে মায়ের কাছে গিয়ে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করে আনতে হবে। তারেক রহমান দৃঢ় কন্ঠে বলেন শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দলন চলবে।

তারেক রহমান নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, গনতন্ত্র পুন:উদ্ধারে স্বৈরাচারি হাসিনার পতন ঘটাতে রাজপথে নেমে আসুন। আন্দোলনকে লক্ষ্যে পৌছাতে হবে। আন্দোলন থামানো যাবে না লাগাতার চালাতে হবে। ঢাকা শহরের এক এলাকা থেকে আরেক এলাকা বিছিন্ন করে দিন। খেয়াল রাখবেন নিরিহ মানুষেরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। লক্ষে পৌঁছাতে যা যা করা দরকার সব করবে তৃণমূল নেতা কর্মীরা ইনশাল্লা বিজয় আমাদের হবেই।

শেখ হাসিনার বিচার করা হবে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহে সেনাবাহিনী অফিসারদের হত্যার জন্য, আইটি সেক্টরের নাম করে তার ছেলের টাকা লুট করার জন্য এবং হেফাজতে ইসলামের ওপর হামলা, ইলিয়াস আলীসহ আমাদের নেতাকর্মীদের গুমের অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিচার হবে বলেই শেখ হাসিনা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পান। কারণ তারা জানে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’

তারেক বলেন, ‘কিছু দিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, ‘‘বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না।’’ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বলতে চাই, আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে ওই সব নেতাকর্মীরা যেন আর ঘর থেকে বের হতে না পারে। আন্দোলন সফল করতে হবে। আন্দোলন সফল হওয়ার পর গঠিত সরকারকে আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার করতে হবে।’

রাজাকারদের সঙ্গে বরাবরই আওয়ামী লীগের সখ্য রয়েছে- এমন অভিযোগ করে বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে আমার জিজ্ঞাসা-দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের জন্য তোমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলে তা কি হয়েছে? তা হলে পদ্মাসেতুর কাজ বন্ধ হত না। নতুন প্রজন্মের প্রতি আমার আহ্বান তোমরা কোন বাংলাদেশ চাও? আমার দল সুযোগ পেলে এ বাংলাদেশে কালো বিড়ালের সুযোগ থাকবে না। অন্যায়কে অন্যায় বলা হবে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে শুধু ফেসবুকে বসে থাকলে চলবে না। ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমাদের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজপথে নেমে আসতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে তৃণমূল নেতাকমীরা ৯০-এ স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। আবার কেন পারবেন না। যখন দেখবেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে কেবল তখনই আন্দোলন বন্ধ হবে। শেখ হাসিনার বিদায় না হওয়ার আগে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। রাজপথ ছাড়া যাবে না।’

সরকার সামর্থক সাংবাদিকদের বিবেগ জাগ্রত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন , সাগর-রুনির নিস্পাপ শিশু মেঘের মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও আপনারা আপনাদের সহকর্মীদের বিচার নিশ্চিত করতে সোচ্চার হন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতশত নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।

সভায় আরো বক্তৃতা দেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, সাবেক আহব্বায়ক এম এ মালেক, ব্যরিষ্টার মির হেলাল, তারেক বিন আজিজ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল হামিদ চৌধুরী, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আখতার হোসেন, আহমদ আলী, যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মামুন, সহসাধারণ সম্পাদক মাহতাব, দপ্তর সম্পাদক ড. মুজিবুর রহমান, বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান পাপ্পু, যুক্তরাজ্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব বিপ্লব পোদ্দার, ব্যারিস্টার আকরাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাসির আহমেদ শাহীন, সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন, যুবনেতা আবজাল হোসেন, এসএম লিটন, দেওয়ান বাসিত, দেলোয়ার বিপু, সোহেল আহমেদ, মন্‌জুর আহমেদ খান, শাহরিয়ার জুনায়েদ, নুরুল আলী রিপন, টিপু আহমেদ, শাহীন আহমেদ, মাওলানা শামীম  প্রমুখ।

তারেক রহমানের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করে একুশে টেলিভিশন ও অনলাইন টেলিভিশন ইউএনএন টিভি।