চাঁদের মাটিতে ‘পা’ ছোঁয়াবে ভারত

SHARE

চাঁদের মাটিতে কি আসলেই পানি আছে? অথবা পানি থাকার মতো পরিবেশ বা কোনো খনিজ? এই উত্তর খুঁজবে ভারতের চন্দ্র অভিযান-২। অভিযান সফল হলে এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটিতে ‘পা’ ছোঁয়াবে ভারত। সেই লক্ষ্যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-২ গতকাল রবিবার রাত ২টা ৫১ মিনিটে (আজ সোমবার ভোররাতে) চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

এর মধ্যে দিয়ে ভারত হতে যাচ্ছে পৃথিবীর চতুর্থ দেশ, যারা চাঁদে পর্যবেক্ষণযান রোভার পাঠিয়েছে। আরেক দিক থেকে ভারত হবে প্রথম; কারণ ভারত প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনো রোভার পাঠাবে, যা এর আগে কোনো দেশ পাঠাতে পারেনি।

ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র (এসডিএসসি) থেকে শক্তিশালী ও সর্বাধুনিক ‘জিএসএলভি-মার্ক-৩’ রকেটের পিঠে চড়ে রওনা দেয় ভারতের চন্দ্রযান-২। এই চন্দ্রযানে থাকবে তিনটি অংশ। এর একটি ‘অরবিটার’, যা চাঁদের কক্ষপথে অবস্থান করে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করবে। দ্বিতীয় অংশটি হচ্ছে ল্যান্ডার তথা অবতরণকারী অংশ ‘বিক্রম’। আরেকটি অংশ হচ্ছে রোভার, যার নাম রাখা হয়েছে ‘প্রজ্ঞান’। রোভার হচ্ছে এক ধরনের পর্যবেক্ষণ যান (স্পেস অবজারভেটর ভেহিকল), যা চাঁদের পিঠে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াবে এবং তথ্য দেবে। ভারতের আগে মাত্র তিনটি দেশ রোভার পাঠাতে পেরেছে চাঁদে। রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), আমেরিকা ও চীন। অভিযান সফল হলে ভারত হবে চাঁদে রোভার প্রেরণকারী চতুর্থ দেশ।

ইসরো জানিয়েছে, উেক্ষপণের এক মাস ২৫ দিন পর আগামী সেপ্টেম্বরে চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে খুবই ছোট একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’, যার ওজন মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। আর চন্দ্রযান-২-এর সার্বিক ওজন তিন হাজার ৮৫০ কিলোগ্রাম বা প্রায় চার টন। ল্যান্ডারটি নেমে যাওয়ার পর চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারটি চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার ওপরে থাকবে।

চন্দ্রযান-২ পাঠানোর উদ্দেশ্য, চাঁদের পিঠের বালুকণায় মিশে থাকা মৌল ও খনিজ পদার্থ কী পরিমাণ তা জানা। সেই মৌল বা খনিজগুলো নিষ্কাশনের যোগ্য কি না তা যাচাই করা। যে স্বপ্নটা প্রথম দেখেছিলেন ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ মেরুর দিকেই চাঁদের অন্দরে এখনো বয়ে চলেছে জলের ধারা। উল্কাপাত বা অন্য কোনো মহাজাগতিক বস্তু আছড়ে পড়ায় সেখানে একটি বিশাল গর্ত (ক্রেটার) তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এর ফলে চাঁদের অন্দরে মৌল বা খনিজ বা পানির অনুসন্ধান কাজটা সহজতর হয়ে উঠতে পারে। সূত্র : আনন্দবাজার।