ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর আক্রমণের পর দেশটির সুরক্ষাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিএস) বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। বুধবার আবার সিসিএসের বৈঠক হবে। সিসিএস হলো ভারতের সুরক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংস্থা।
শুধু সিসিএস নয়, রাজনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিপিএ), অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিইএ) ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকও বুধবার সকালে হওয়ার কথা আছে।
পেহেলগামের ঘটনার পর সিসিএসের বৈঠক হলেও মন্ত্রিসভার বৈঠক এই প্রথমবার হবে। পেহেলগামের পর থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাবেক সেনা ও কূটনীতিকরা বারবার বলছেন, ভারত আবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
কংগ্রেস সংসদ সদস্য ও সাবেক কূটনীতিক শশী থারুর এএনআইকে বলেন, ‘উরির পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছে।
পুলওয়ামার পর বালাকোটে বিমান হামলা হয়েছে। আমার মনে হয়, আমরা এবার তার থেকেও বেশি কিছু দেখব। এটা স্পষ্ট, আমাদের সামনে একগুচ্ছ বিকল্প আছে—কূটনৈতিক, আর্থিক, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, গোপন ও প্রকাশ্য অ্যাকশন। কিছু প্রকাশ্য সামরিক প্রতিক্রিয়া এড়ানো যাবে না বলেই মনে হয়।
পুরো দেশ এটাই চাইছে ও দাবি করছে।’
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডব্লিউকে বলেন, ‘পেহেলগামের ঘটনার পর সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারে। গোটা দেশ সেই প্রত্যাশা করছে। তবে কবে হবে, কিভাবে হবে, সেটা সরকার ঠিক করবে।’
কাশ্মীরে ৪৮টি পর্যটনস্থল বন্ধ
এদিকে কাশ্মীরে নিরাপত্তার কারণে ৪৮টি পর্যটনস্থল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে আছে দুধপাহাড়ি, আহরবাল, বাঙ্গাস, উলার, রামপোরা, রাজপোরা, খামপো, ভিজিটপ, নারানাগ, সিনথান টপ, ইউসমার্গ, শ্রুঞ্জ জলপ্রপাত, মুন্দিজ-হামাম-মারকুট জলপ্রপাত, খাদনিয়ারের ইকো পার্ক, ভেরিনাগ গার্ডেন, অষ্টানমার্গ, বাদামওয়ারি।
কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় এখন অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের স্লিপার সেল এখনো সক্রিয়। তাই এখন আর কোনো ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এক্স অ্যাকাউন্ট ব্লক
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মুহম্মদ আসিফের এক্স অ্যাকাউন্টও ভারত ব্লক করল। ভারতে কেউ এই অ্যাকাউন্টে যেতে গেলেই বার্তা আসছে, এই অ্যাকাউন্ট আইনি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আটকে দেওয়া হয়েছে।
পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসীদের আক্রমণের পর খাজা আসিফের বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। যুক্তরাজ্যের একটি টিভি চ্যানেলে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান বহু দশক ধরে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করে আসছে।
রাহুল গান্ধীর চিঠি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য অবিলম্বে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী।