দিনের শুরুটা যে সঠিক পূর্বাভাস দেয় না তা যেন প্রমাণ করল বাংলাদেশ। তা না হলে এত দুর্দান্ত শুরুর পরেও এমন অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো না নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষটায় ব্যাটিং ধসে পড়ে বাংলাদেশ। যার ফলে ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে দিন শেষ করে স্বাগতিকরা।
অথচ ৬৪ রানের লিডটা আজ বাড়ার সঙ্গে স্কোরবোর্ডে উইকেটের সংখ্যা আরও কম হতে পারত। সেটা হতে দেননি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত লেগ স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা।
তৃতীয় সেশনে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন মাসেকেসা। ২৮ বছর বয়সী স্পিনারের শিকার হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, জাকের আলী অনিক ও নাঈম হাসান।
তার এমন অভিষেকে ম্যাচে ফিরেছে জিম্বাবুয়েও। আগামীকাল তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজ (১৬) ও তাইজুল ইসলাম (৫)।
আজ দিনের প্রথম বলেই জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেটটি নিয়ে প্রতিপক্ষকে ২২৭ রানে অলআউট করেন তাইজুল। এরপর বলা যায় স্বপ্নের মতো ইনিংসের শুরু পায় বাংলাদেশ।
কেননা ৩২ ইনিংস আর সময়ের হিসেবে ২৮ মাস পর টেস্টের উদ্বোধনী জুটি ১০০ রান পায়।
ওপেনিংয়ে ১১৮ রানের দুর্দান্ত জুটিটা এনে দেন দুই ব্যাটার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়। প্রায় ৩ বছর পর ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ৩৯ রানে বিজয় আউট হলে তাদের জুটি যায় ভেঙে। পরে দ্বিতীয় উইকেটে মমিনুল হককে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন ওপেনার সাদমান। ৭৬ রানের জুটি বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ।
তবে ৩৩ রানে আউট হয়ে সাদমানকে রেখে যান মমিনুলও।
মমিনুলের সঙ্গে জুটি গড়ার পথেই অবশ্য কাঙ্খিত তিন অঙ্ক স্পর্শ করেছেন সাদমান। ৪ বছর পর যে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটির আগে ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই অভিষেকটি পেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। সেদিনের ১১৫ রানের ইনিংসকে ছাড়িয়ে আজ ক্যারিয়ারসেরা ১২০ রানের ইনিংস খেলেছেন। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৬ চার ও ১ ছক্কায়।
টপ অর্ডারের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে পথ দেখানোর দায়িত্ব পরে দুই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর কাঁধে। দুজনে চতুর্থ উইকেটে ৬৫ রানের জুটি গড়ে পথপ্রদর্শকের কাজটা ভালোভাবেই করছিলেন। তবে ব্যক্তিগত ২৩ রানে অধিনায়ক শান্ত আউট হওয়ার পরেই বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার এলোমেলো হয়ে যায়।
২০ রানেই যে শেষ ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অথচ, দলীয় ২৫৯ রান পর্যন্ত বাংলাদেশের উইকেটের ঘরে সংখ্যাটা ছিল ৩। এর মধ্যে অনেক দিন ধরেই রান খরায় ভোগা মুশফিকুর বিদায় নেন রান আউটে। আর বাকি তিন উইকেটই নিজের ঝুলিতে রাখেন অভিষিক্ত মাসেকেসা। তার অভিষেক রাঙানোর দিনে তাই দুর্দান্ত শুরুর পরেও অস্বস্তি নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।