উত্তর লন্ডনের ফিন্সব্যারি পার্ক মসজিদের মুসল্লিদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। ঘৃণা ও বিভাজনের বিপরীতে ঐক্যের বার্তা নিয়ে সোমবার মসজিদটির সামনে জড়ো হন বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর শতাধিক মানুষ। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমগুলো ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।
পবিত্র রমজানের তারাবি নামাজ শেষে স্থানীয় সময় রোববার রাত ১২টার দিকে ফিন্সব্যারি পার্ক মসজিদের মুসল্লিদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয় এক হামলাকারী। এতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মাকরাম আলী (৫২) নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও ১১ জন, যাদের নয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে।
এ হামলার প্রতিবাদে ফিন্সব্যারি পার্ক মসজিদের সামনে আয়োজিত সমাবেশে মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান কমিশনার ক্রেসিডা ডিক বলেন, ‘এটি স্পষ্টতই মুসলিমদের ওপর হামলা।’ মসজিদ ও মুসল্লিদের নিরাপত্তায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানান তিনি।
খ্রিষ্টান যাজক রেভারেন্ড আদ্রিয়ান নিউম্যান বলেন, ‘কোনো একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর হামলা আমাদের সবার ওপর হামলা।’ সমাবেশে মসজিদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কোজবা বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে নষ্ট করাই উগ্রবাদীদের লক্ষ্য। তা আমরা হতে দিতে পারি না।’
লেবার নেতা জেরেমি করবিন ও লন্ডন মেয়র সাদিক খানসহ বিভিন্ন দলের রাজনীতিকেরা এ সমাবেশে অংশ নেন। তাঁরা হতাহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করেন। প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ‘ভালোবাসার জয় হবে, সন্ত্রাস পরাজিত হবে’, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হও’ লেখাসহ নানা বার্তার প্ল্যাকার্ড।
সোমবার দুপুরেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ফিন্সব্যারি পার্ক মসজিদ পরিদর্শন করেন। যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ঘোষণা করেন তিনি।
এদিকে, আটক সন্দেহভাজন হামলাকারী ড্যারেন অসবোর্নের (৪৭) দক্ষিণ ওয়েলসের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অসবোর্নের পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চার সন্তানের জনক অসবোর্ন যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তাতে তারা ‘হতভম্ব’ ও ‘বিধ্বস্ত’। হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তাঁরা।