বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখল বৃষ্টি

SHARE

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি বাঁচিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টি সহায় হল বাংলাদেশের। কোনো রান না করেও আর মাত্র চার ওভার কাটিয়ে দিতে পারলেই জিতে যেত অস্ট্রেলিয়া। সেটি হতে দিল না বৃষ্টি। কাল কেনিংটন ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পঞ্চম ম্যাচ ভেসে গেল বৃষ্টিতে। ১৮৩ তাড়া করতে নামা অস্ট্রেলিয়া যখন ১৬ ওভারে এক উইকেটে ৮৩, তখনই আকাশ কান্না জুড়ে দেয়। পরে আর খেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৮) ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া দু’দল এক পয়েন্ট করে পেল। টুর্নামেন্টে এটাই বাংলাদেশের প্রথম পয়েন্ট। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ছুঁই ছুঁই ইনিংসের সহায়তায় ১৮২ রান করা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দিল বৃষ্টি। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়া মাশরাফিরা টিকে রইলেন টুর্নামেন্টে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে তামিম ইকবালের দুরন্ত শতকে ৩০৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও আট উইকেটে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেই ওভালেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪.৩ ওভারে ১৮২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। একাই লড়াই করেন তামিম। তবে ছয় চার ও তিন ছক্কায় ১১৪ বলে তার ৯৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটিও বড় পুঁজি এনে দিতে পারেনি দলকে। বাকি সবাই ব্যস্ত ছিলেন আসা-যাওয়ায়। তামিম ছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন সাকিব (২৯) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (১৪)। ২৯ রানে চার উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার মিচেল স্টার্ক। তার তোপের মুখে মাত্র এক রানে শেষ চার উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ওভালেই প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৮ রান করেছিলেন সৌম্য সরকার। তিনি টিকলেন মোটে ১১ বল। শুরু থেকেই অস্বস্তিতে থাকা সৌম্য মাত্র তিন রান করে জশ হ্যাজলউডের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ষষ্ঠ ওভারে ভাঙল ২২ রানের উদ্বোধনী জুটি। অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের দুরন্ত গতির সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে ব্যর্থ ইমরুল কায়েসও। একাদশ ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে পয়েন্টে অ্যারন ফিঞ্চকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৬ বলে ইমরুলের রান ছয়। ১৭তম ওভারে দলীয় ৫৩ রানে পতন ঘটে তৃতীয় উইকেটের। ২০ বলে নয় রান করে নিজের ভুলেই ফিরতে হল মুশফিকুর রহিমকে। হেনরিক্সের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে এলবিডব্লু হন তিনি। প্যাডে লাগার আগে বলটা তার ব্যাটের কানায় লেগেছিল। কিন্তু সেটা বুঝতে না পারায় রিভিউ নেননি মুশফিক। প্রথম ১০ ওভারে ৩৭ ও ২০ ওভারে আগে ৬৫ রান। একপ্রান্ত আগলে রাখা তামিম চতুর্থ উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে শুরুর বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেন। ২৩তম ওভারে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে হেনরিক্সের পাঁচ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে ১৫ রান তুলে নেন তামিম। পরের ওভারে ৬৯ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ৩৭তম ওয়ানডে ফিফটি। ১১ রানে ‘জীবন’ পাওয়া সাকিবও বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি তামিমকে। ৪৮ বলে ২৯ করে অনিয়মিত স্পিনার ট্রাভিস হেডের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন সাকিব। এরপর আবারও তামিমের সেই একার লড়াই। নিজের পরপর দুই ওভারে সাব্বির রহমান (৮) ও মাহমুদউল্লাহকে (৮) ফেরান লেগ-স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা।
৩৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছয় উইকেটে ১৫৩। এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে তামিমের সঙ্গী হন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেলা বাংলাদেশ বোলিংয়ে শক্তি বাড়াতে এদিন মোসাদ্দেক হোসেনের জায়গায় খেলায় মিরাজকে। তবে আট ব্যাটসম্যান খেলিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তামিম ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি অসি বোলারদের সামনে। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে চলা তামিম থামেন নব্বইয়ের ঘরে। ৪৩তম ওভারে মিচেল স্টার্ককে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হ্যাজলউডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১১৪ বলে ৯৫ রান করেন তামিম। ওই ওভারেই টানা দুই বলে মাশরাফি ও রুবেলকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন স্টার্ক। পরে মিরাজকেও বোল্ড করে বাংলাদেশকে ১৮২ রানে গুটিয়ে দেন স্টার্কই।