কালবৈশাখী বৃষ্টিতে ভিজল রাজধানী, নগরজুড়ে স্বস্তি-দুর্ভোগ

SHARE
২৪আওয়ার রিপোর্ট  :  সকাল থেকে প্রকৃতিজুড়ে ‘বৈশাখেতে দারুণ গরম, খরায় পুড়ে ছাই’-এর দৃশ্যপট-অস্বস্তি ঘিরে রেখেছিল। ছিল অতিরিক্ত আপেক্ষিক আর্দ্রতার অধিকার। তবে দুপুর গড়িয়ে যেতেই পাল্টে যেতে থাকে আবহাওয়া।
সূর্যের তেজকে হারিয়ে আকাশ দখল করে সজল কালো মেঘের রাজত্ব। শেষ বিকেলে বজ্রগর্ভ মেঘমালার ঘনঘটায় রচিত হয় রাতের আবহ। অতঃপর কালবৈশাখের গর্জন-তর্জন। মেঘের গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ। সন্ধ্যা হতে না হতেই নামল বৃষ্টি। যেনো বৈশাখী সন্ধ্যায় ‘আষাঢ়ে বৃষ্টি’। স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল রাজধানী। একটানা বর্ষণে প্রাণ ফিরে পায় রুক্ষতায় ভরা সবুজ প্রকৃতি। চৈত্রের প্রখরতায় তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠা পশু-পাখিরা বৈশাখী ধারায় যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। তবে হঠাৎ ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টিতে নগরীতে চরম দুর্ভোগে পড়েন ঘর ফেরত মানুষ। যানজট-জলাবদ্ধতায় থমকে যায় নগরজীবন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকাতেই বৃষ্টি-কালবৈশাখী হতে পারে। এ সময় সারা দেশে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে, সঙ্গে বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, বৃষ্টির হওয়ার কারণে আগামী কয়েকদিন পর্যন্ত তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে।
একজন আবহাওয়াবিদ বলেন, এটি মৌসুমী বৃষ্টি। পুরো বৈশাখ মাস এভাবেই চলতে পারে। চৈত্র জুড়েই চলছিল মাঝারি তাপদাহ। এতেই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল জনজীবন। অবশেষে বৃষ্টি নগরজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে।
কৃষি অধিদপ্তরের মতে,এই বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে বর্ষেছে আম গাছের ওপর। তাপদাহের কারণে যারা আমগাছে সেচের কথা ভাবছিলেন তাদের দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। মাঠে বোরো ফসল রয়েছে। তাই বৃষ্টির খুব প্রয়োজন। শিলাবৃষ্টি হয়নি।
এদিকে বিকেল থেকে কালবৈশাখীসহ ঝোড়ো হাওয়া রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের নদ-নদীগুলো। বৈরী এই আবহাওয়ার কারণে ঢাকার সদরঘাটসহ দেশের উত্তর, মধ্যাঞ্চলের নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের নৌবন্দরগুলো থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। সাড়ে পাঁচটার আগে ঢাকা সদরঘাটসহ যেসব নৌবন্দর থেকে নৌযান চলে গেছে, সেগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।