২৪আওয়ার ডেস্ক : ভিন্ন ভিন্ন ঋতুর নানা বৈচিত্রের আবহাওয়ার সঙ্গে জীবনযাপন করে আমরা বাঙালিরা অভ্যস্থ। গ্রীষ্মকালে সূর্যরশ্মির কারণে তীব্র গরমে জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠে। দুপুরের পর থেকেই খুব ক্লান্ত, শ্রান্ত, অবসন্ন লাগে। কাজে মন তো বসেই না, উলটো ভীষণ শরীর খারাপ লাগে। এইসব শরীর খারাপের লক্ষণ গুলোর পেছনে কিন্তু কারণ সেই একই- গরম। তাপে শরীরের প্রয়োজনীয় পানি বের হয়ে যায় ঘাম হিসাবে, আর সেই পানির সাথে বের হয়ে যায় প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান সমূহ। ফলে ডায়রিয়া, বদহজম, বমি, জ্বর ইত্যাদি নানা রোগের সঙ্গে হিট স্ট্রোকের মত বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তবে নিজেরা স্বাস্থ্য সচেতন থকলে গ্রীষ্মকাল উপভোগ করা যায় সুন্দর এবং স্বাভাবিকভাবেই।
গ্রীষ্মকালে সূর্যরশ্মির কারণে তীব্র গরমে ক্লান্তি জেকে ধরে। এবং কেবল মাত্র পানি পান করে এই সমস্যাগুলো দূর করা সম্ভব নয়। গরমে সুস্থ থাকতে প্রয়োজন তাই বিশেষ পানীয়।
সাধারণ পানি
দেহের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা খুবই জরুরি। তাই গরমে পানির স্বল্পতা রোধ করতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। সাধারণ পানি তো খাবেন অবশ্যই। তবে কেবল সাধারণ পানিতে পূরণ হবে না শরীরের ঘাটতি। চাই বাড়তি কিছু, এমন কিছু যাতে প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান মিলবে।
ডাবের পানি
ডাবের পানিতে পটাশিয়ামসহ আরও নানান প্রয়োজনীয় উপাদান আছে বিধায় তাতে আপনার দুর্বল বা ঝিম ঝিম লাগার ভাবটা একেবারেই কমে যাবে। পয়সা খরচ করে সফট ড্রিঙ্ক খাওয়ার চাইতে ডাবের পানি খান।
লেবুর শরবত
লেবুর শরবত হতে পারে খুব ভালো একটি গ্রীষ্ম পানীয়। গুনে ভরা লেবুর সাথে চিনি আর পানি মিশিয়ে তৈরি করে ফেলুন চমৎকার শরবত। সোডিয়ামের অভাব মেটাতে দিতে পারেন এক চিমটি লবণও।
আনারসের শরবত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর একটি ফল আনারস। এটি শুধু সুস্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। হৃদ্রোগসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধেও লড়তে আনারসের থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপকারী। রসালো এ ফল জুস তৈরি করেও খাওয়া যায়।
বেলের শরবত
বেলের শরবত গরমে খুবই উপকারী। বেলের হলুদাভ অংশ সংগ্রহ করে চিনির সাথে পানিতে মিশিয়ে শরবত করে নিন।
তরমুজের শরবত
তরমুজ খান। তরমুজে থাকে প্রচুর পানি, যা কিনা শরীরের আদ্রতার ঘাটতি পূরণ করবে। তরমুজের জুস এই গরমে খুব ভালো লাগবে, বানাতেও সহজ। জুস হিসাবে খান বা এমনি- তরমুজ খাওয়া এই গরমে অবশ্যই জরুরি।
দুধের ঘোল বা মাঠা
মাঠা প্রচলিত বাংলায় যার অপর নাম ঘোল। গ্রীষ্মকালে পেটের পীড়াসহ নানা রোগব্যাধি শুরু হলে ঘোলের কদর বেড়ে যেত। টক দৈ তে পানি, চিনি, লবন, পেস্তা বাদাম বাটা, লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মাঠা।
টক দই ও পুদিনা পাতা
গরমের দিনে টক দই খুব উপকারি। টক দই ও পুদিনা পাতা বেটে একটু লবণ দিয়ে পানিতে গুলিয়ে শরবত করে নিতে পারেন।
মৌসুমী ফল
সুস্থ থাকুন এই গরমে। খাবার- পানীয় গ্রহণ করুন বুঝেশুনে। একটু বুদ্ধি করে চললেই দেখবেন কেমন তরতাজা থাকছেন আপনি গ্রীষ্মের দাবদাহেও। সাধারনত গ্রীষ্মকালে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এ সময় অনেক ধরণের টক জাতীয় মৌসুমী ফল (কাঁচা আম, কামরাঙা, আমড়া) এবং রঙিন ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। মালটা, ডাবের পানি এসময় পানির চাহিদা পূরণ করে।
সতর্কতা
সন্ধ্যা ও রাতের বেলায়
রাতের বেলা, কিংবা সন্ধ্যায় লেবুর সরবত, ডাব ইত্যাদি খাবেন না। এসিডিটি, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।