পদ্মায় দুর্নীতি পায়নি দুদক অব্যাহতি পাচ্ছেন আসামিরা

SHARE

পদ্মা সেতু দুর্নীতি-ষড়যন্ত্র মামলা থেকে সব আসামিকে অব্যাহতি দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আলোচিত এই দুর্নীতি-ষড়যন্ত্র মামলায় কোনো আসামির বিরুদ্ধে উল্লেখ করার মতো কোনো প্রমাণ না পাওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।image_96829_0

বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান একথা বলেন। এসময় দুদকের অপর দুই কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মিডিয়ায় ২০১১ সালে পদ্মা সেতু দুর্নীতি-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই আলোকে তদন্তকাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া না যাওয়ায় তখনই তারা বিষয়টি নথিভুক্ত করতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, কিন্তু বিশ্বব্যাংকের কথায় তারা অধিকতর অনুসন্ধান ও তদন্ত শুরু করেন। দীর্ঘ তদন্তে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদলও সহায়তা করেছে। দুদক ২০১২ সালের ডিসেম্বর এই বিষয়ে মামলাও করে। কিন্তু মামলাটি হয়েছিল দুর্নীতি করার ষড়যন্ত্র অভিযোগে। বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে একমত হয়েছিল।
বদিউজ্জামান বলেন, ষড়যন্ত্র মামলা বাংলাদেশে এই প্রথম। ‘আমরা তদন্তকালে দেশে এবং কানাডাসহ বিভিন্ন দেশেও অনুসন্ধান চালাই। কিন্তু কোথাও দোষী সাব্যস্ত করার মতো প্রমাণ পাইনি। এ জন্য মামলাটি নথিভক্ত সুপারিশ আসে। এ প্রেক্ষাপটেই মামলাটি নথিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত, কানাডার প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতুর পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থানায় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওএসডি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
দুদকের মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে রাখা হয় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে। মামলায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে আসামি না করায় তখন অর্থায়ন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় বিশ্বব্যাংক। বিষয়টি তখন সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতে ফেলে। অভিযোগ মাথায় নিয়ে অবশেষে যোগাযোগমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় সৈয়দ আবুল হোসেনকে।
বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্বে ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০,৫০৭ কোটি টাকা) ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা অনুমোদন করে। কিন্তু পরে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সরকার বিশ্বব্যাংকের অর্থে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায়। সরকার এখন নিজের তহবিল থেকে অর্থ জোগান দিয়ে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।