সানি-তাসকিনের বিশ্বকাপ শেষ

SHARE

9c559880cf5d6214823c250121bbe7a4-24গতকাল দুপুরে প্রথম দুঃসংবাদটি এল আরাফাত সানিকে ঘিরে। বাঁহাতি এই স্পিনারের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করেছে আইসিসি! সন্ধ্যায় এল আরেকটি দুঃসংবাদ—আইসিসি ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশনকেও বলেছে অবৈধ। তার মানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের হল্যান্ড ম্যাচে আম্পায়াররা যে সন্দেহ করেছিলেন, দুজনের বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা করে সেটাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। তাই চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এখানেই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের এই দুই বোলারের।
বাঁহাতি স্পিনার সানির বিকল্প হিসেবে দলে নেওয়া হয়েছে আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজীবকে। তবে তাসকিনের বিকল্প অফ স্পিনার ও ব্যাটসম্যান শুভাগত হোম চৌধুরী। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুভাগতর অভিষেক হয়েছে আগেই। সাতটি টেস্ট ছাড়াও ওয়ানডে খেলেছেন চারটি ও টি-টোয়েন্টি দুটি। তবে সাকলাইন এখনো আছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায়, যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যথেষ্টই অভিজ্ঞ। ৬৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ছাড়াও খেলেছেন ৫৯টি লিস্ট ‘এ’ ও ৩২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটেও সানির বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। তাঁর অ্যাকশনে ত্রুটি থাকাটা তাই অনুমিতই ছিল। কিন্তু ভারতে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট এবং বিসিবিসহ সবাই মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন যে, তাসকিনের অ্যাকশন চেন্নাইয়ের রামাচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার থেকে শুদ্ধতার ছাড়পত্র নিয়ে ফিরবে। শেষ পর্যন্ত এক যাত্রায় দুই ফল হলো না তাসকিন-সানির। কাল সন্ধ্যায় আইসিসি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, দুজনের বোলিং অ্যাকশনই অবৈধ। অ্যাকশন শুদ্ধ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং করতে পারবেন না তাঁরা। আইসিসির সদস্যদেশগুলোর ঘরোয়া ক্রিকেটেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। তবে বিসিবি চাইলে পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁদের বোলিংয়ের সুযোগ দিতে পারে।
হল্যান্ড ম্যাচে আম্পায়াররা সন্দেহ প্রকাশ করার পর ১২ মার্চ স্পিন কোচ রুয়ান কালপাগের সঙ্গে সানি ও ১৫ মার্চ বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে তাসকিন চেন্নাইয়ে গিয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন। কাল সেগুলোরই চূড়ান্ত রিপোর্ট আসে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বেশির ভাগ বলেই সানির কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হয়ে যায়। তবে তাসকিনের ক্ষেত্রে সব বলে সমস্যাটা হয় না। কিছু কিছু বলে হয়।
নিয়ম অনুযায়ী তাসকিন-সানিকে এখন বিসিবির অধীনে বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধ করার কাজ করে আবারও পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা থাকে না। বোলিং অ্যাকশন শুদ্ধ করে কখন পরীক্ষা দেওয়া যাবে, সে সিদ্ধান্ত নেবেন সানি-তাসকিন এবং তাঁদের পুনর্বাসন পরিচালনা করা কোচরাই।
সানির বিকল্প মোটামুটি ঠিক করাই ছিল। আইসিসির ঘোষণা আসার পরই তাঁর জায়গায় বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজীবকে পাঠানোর কথা জানান নির্বাচক হাবিবুল বাশার, ‘সানির বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি ধরা পড়েছে। আমরা সাকলাইন সজীবকে তার বিকল্প হিসেবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ কিন্তু পরে তাসকিনের অ্যাকশনও অবৈধ ঘোষিত হলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান নির্বাচকেরা। প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে হাবিবুল এবং আরেক নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন শুভাগতকে তাসকিনের বিকল্প হিসেবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
একজন পেস বোলারের বিকল্প ব্যাটিং অলরাউন্ডার কেন—জানতে চাইলে মুঠোফোনে ব্যাখ্যা দিয়েছেন মিনহাজুল, ‘ধর্মশালার কন্ডিশনের কথা চিন্তা করে প্রথমে আমরা দলে পাঁচ পেসার রেখেছিলাম। কিন্তু এখন কন্ডিশন ভিন্ন। এক ম্যাচে তিন পেসার খেলানোর চিন্তা নেই টিম ম্যানেজমেন্টের। তারা একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার চেয়েছে। সে চাহিদা অনুযায়ীই শুভাগতকে পাঠানো হচ্ছে।’ শুভাগত বিশ্বকাপের দলের স্ট্যান্ডবাই তালিকায় থাকলেও সাকলাইন ওই চারজনের মধ্যে ছিলেন না।