তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই পাইলটকে দায়ী করায় ক্ষুব্ধ ভারতীয় সংস্থা

SHARE

তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই অনুমানের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করে বিতর্কে জড়িয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ ও ‘রয়টার্স’। আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় পাইলটদের দায়ী করে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছে ভারতের পাইলটদের সংগঠন ‘দ্য ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান পাইলটস’ (এফআইপি)।

সংগঠনের দাবি, মৃত পাইলটদের অসম্মান ও তাদের পরিবারের প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম দুটি। ফলে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ নিয়ে পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিশও।

শনিবার এক বিবৃতিতে এফআইপি-র প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন সিএস রণধাওয়া জানান, এখনো তদন্ত শেষ হয়নি। অথচ সংবাদমাধ্যমগুলোর আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তারাই যেন তদন্তকারী সংস্থা!

তার অভিযোগ, ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ ও ‘রয়টার্স’ যাচাই-বাছাই না করেই ককপিটের কথোপকথনকে ভিত্তি করে পাইলটদের দায়ী করেছে।

১২ জুন আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় ২৬০ জন।
সেই দুর্ঘটনা ঘিরে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) এখনো তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

তাদের বক্তব্য, পাইলটদের কোনো ভুল হয়েছে—এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। এর পরও বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলো পাইলটদের দায়ী করে ‘মনগড়া গল্প’ পরিবেশন করেছে বলে অভিযোগ এফআইপি-র।

দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর ‘অনুমাননির্ভর’ প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি)।
সংস্থাটির চেয়ারপার্সন জেনিফার হোমেন্ডি বলেন, এ রকম উচ্চমাত্রার দুর্ঘটনার তদন্ত সময়সাপেক্ষ। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমগুলোর এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া অনভিপ্রেত।

এনটিএসবি-র অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে পাইলটদের সংগঠন। রণধাওয়া বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ যে, এনটিএসবি এই অবৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে। এটি পশ্চিমা মিডিয়ায় ভারতীয় পাইলটদের ঘিরে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তি দূর করতে সাহায্য করবে।

সংগঠনের তরফে পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, অনুমানের ভিত্তিতে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন শুধু ভুল নয়, তা শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। এ ধরনের সাংবাদিকতা শুধু পেশাগত দায়িত্বহীনতাই নয়, মৃতদের অপমান এবং তাদের পরিবারের প্রতি অবজ্ঞাও।

সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, এমন কাণ্ড পুরো পাইলট সমাজের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের প্রতিবেদন তাদের মনোবলেও আঘাত হানছে।

এফআইপি-র আহ্বান, তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অনুমাননির্ভর সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকে। আর ইতিমধ্যে যারা এই ধরনের প্রতিবেদন ছড়িয়েছে, তাদের কাছে সংগঠনের সরাসরি দাবি—প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।