বুর্জ আল আরব: বিশ্বের সেরা হোটেল এর জানা অজানা

SHARE

burj-al-arab-hotel-dubai-picture1-from-dhaka-city-guide
কি দিয়ে শুরু করব বুঝতে পারছি না। তবুও শুরু তো করতে হবে। আসুন “বুর্জ আল আরব” সম্পর্কে মানুষের কিছু অভিমত দিয়ে শুরু করি। কেউ কেউ বলেন দূর থেকে দেখলে “বুর্জ আল আরব” কে পাল তোলা নৌকার মতো দেখায়, কেউবা বলেন তিমি মাছের মতো দেখায়, আবার কারো কারো মতে
চমকের শুরু

৭ তারকা এই হোটেলটির সাধারণ মানের একটি রুম একদিনের জন্য ভাড়া নিতে হলে খরচ করতে হবে বাংলাদেশী টাকায় সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা। আর যদি স্যুট নিতে চান তাহলে গুনতে হবে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। ডলারের হিসেবে স্যুইট গুলোর মূল্য শুরু হয় প্রতি রাত ১,০০০ ডলার থেকে ১৫,০০০ ডলার পর্যন্ত; রয়্যাল স্যুটগুলো সবচেয়ে ব্যয়বহুল যাতে থাকতে প্রতি রাতে খরচ পড়বে ২৮,০০০ ডলার।

টাকার পরিমাণটা শুনে অনেকের মনে হতে পারে খুব বেশি মানুষ এই হোটেলে যায় না। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনার টাকা থাকলেই আপনি যখন তখন রুম ভাড়া নিতে পারবেন না। এজন্য আগে থেকে রুম বুকিং দিতে হবে সাথে অবশ্যই বায়োডাটাও জমা দিতে হবে।

নির্মাণকালীন সময়ের দৃশ্য

ভিতরে প্রবেশ করার আগে বাইরেটা একটু চোখ বুলিয়ে নিই

সমুদ্রের তীর থেকে ২৮০ মিটার সমদ্রের ভেতরে কৃত্রিম একটি দ্বীপের উপর এটি নির্মাণ করা হয়েছে। সাগরের ভাসমান বুর্জ আল আরবে যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে সাঁকোর মতো একটি সুপ্রশস্থ পথ। সাঁকোটি পার হলেই সবুজের অভ্যর্থনা।

ভবনের বাহিরের কাঠামোটি মূলত কংক্রীটের টাওয়ারের মাঝে প্রোত্থিত স্টীলের কংকাল কাঠামো । ভবনটির বহির্ভাগকে দাউ নৌযানের পালের আকৃতি দিতে মূল মাস্তুল থেকে দুটি V আকৃতির কাঠামো দু’দিকে প্রসারিত। প্রসারিত কাঠামোর মধ্যভাগ টেফ্লন কোটেড ফাইবার গ্লাস দিয়ে আবদ্ধ। মূল মাস্তুল এবং পালের মধ্যকার অংশটি বেঁকে মধ্যভাগে একটি আট্রিয়াম সৃষ্টি করেছে। পালের অংশটি বানানো হয়েছে ডায়নিয়ন নামক উপাদান দিয়ে যা ঘিরে আছে প্রায় ১৬১,০০০ স্কয়ার ফিট এলাকা (১৫,০০০মিটার স্কয়ার), এতে আছে দুইটি পরত, এবং ১২ ভাগে বিভক্ত প্যানেলটি উল্লম্বভাবে স্থাপন করা হয়েছে। বহির্ভাগটি মরুভূমির তীব্র তাপমাত্রা সহনশীল করার জন্য ডুপন্ট টেফ্লন (DuPont Teflon) দিয়ে মোড়ানো, ফলস্বরূপ কর্তৃপক্ষ আশা করে ৫০ বছরের মধ্যে এর রঙ অনুজ্জ্বল হবেনা।

উদ্বোধনের সময় এমনই আলোয় আলোয় ভরে উঠেছিল বুর্জ আল আরব এর আকাশ

এবার আসুন ভিতরে প্রবেশ করি

হোটেলে প্রবেশ করার আগে নিরাপত্তা তল্লাশী বাধ্যতামূলক এবং নির্দিষ্ট অঙ্কের দিরহাম গুনে দিতে হবে। হোটেলের প্রবেশ পথেই রয়েছে সুবিশাল অ্যাকুরিয়াম। অ্যাকুরিয়ামে রয়েছে নানা ধরনের রং-বেরংয়ের মাছ।

যে বুর্জ আল আরবের বাহিরের সাজসজ্জ্বা অত্যাধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন সেখানে এর অভ্যন্তরের অতিথিরা বিলাসবহুল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিশেলে গড়া রাজকীয় অন্দরসজ্জ্বা উপভোগ করেন। হোটেলটির ৮৭,০০০ স্কয়ার ফিট ২২ ক্যারেট সোনার পাত (Gold Leaf) দিয়ে মোড়ানো, প্রায় ৭২,০০০ স্কয়ার মিটার ৩০ ধরনের পাথর এবং মার্বেলে ঢাকা। লবিতে একটি ত্রিমাত্রিক কৃত্রিম ঝরনা স্থাপিত আছে যার আকৃতি ইসলামিক স্টারের মতো, এর একেকটি কোণা হোটেলটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থলের দিকনির্দেশ করে – তিনটি রেস্টুরেন্ট, গেস্টরুমের মধ্যকার করিডোর। এবং আট্রিয়ামের শীর্ষ মনে করিয়ে দেয় ক্লাসিক্যাল আরব্য আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ফর্ম।

পুরো হোটেল জুড়েই চোখে পড়বে সুন্দর সুন্দর সব অ্যাকুরিয়াম এবং গেস্টদের জন্য রয়েছে সুবিশাল অভ্যর্থনা কেন্দ্র

ইন্টেরিয়র ডিজাইন এর এক চমৎকার সমাবেশ ঘটেছে পুরো হোটেল জুড়েই

রুম/স্যুটগুলো

পুরো ভবনটি বিশালাকৃতির হওয়া সত্ত্বেও এতে মাত্র ২৮ টি ফ্লোর আছে, প্রত্যেকটি ফ্লোর দোতলা। সবচেয়ে ছোট স্যুইট টির আকৃতি ১৮১৯ স্কয়ার ফিট এবং সবচেয়ে বড় স্যুইটটির আকৃতি ৮৩৯৬ স্কয়ার ফিট। হোটেলটিতে মোট ২০২টি কক্ষ রয়েছে।

প্রতিটি স্যুট প্রাচ্যের আভিজাত্য আর পাশ্চাত্যের প্রযুক্তির মিশেলে তৈরী। মার্বেলে মোড়ানো সাদা টুসকান কলাম এবং সর্পিলাকার সিঁড়ি গুলো ক্লাসিসিজম এবং আর্ট ন্যূভো’র অনন্য দৃষ্টান্ত। স্পা-কর্ণারের সমান একেকটি বাথরূম মোজাইক করা মেঝে আর দেয়াল আরবী জ্যামিতিক ফর্মের প্রভাবে পেয়েছে শিল্পনিপুণ ছোঁয়া, সে আরবী জ্যামিতি’র প্রভাব ভবনের অন্যসব কোণেও খুঁজে পাওয়া যায়।

হোটেলের স্যুটে যারা উঠবেন সেই মেহমানকে দেয়া হয় একটি বিশেষ ধরনের কার্ড। কার্ডটি স্পর্শ করলেই সোনালী রঙের দরজাটি খুলে যায়। রিমোট কন্ট্রোলে চলে হোটেল স্যুটের ভেতরের দরজা, জানালার পর্দা খোলার কাজ। টিভি, টেলিফোন, ইন্টারনেট, লাইব্রেরী এমনকি হোটেলের যেই খাটটি ঘুমানোর জন্য রয়েছে সেটিও ঘূর্ণায়মান। ঘুম পাড়ানি মাসি পিসির মতো ছড়া বলে শিশুদের যেমন ঘুম পাড়ানো হয় তেমনি এই হোটেলের স্যুটের বিছানায় গেলে আপনা আপনিই চোখের পাতায় ঘুম চলে আসবে।

প্রতিটি রুমই এরকম সাজানো গুছানো

অতিথিদের জন্য রয়েছে ২৪ ক্যারেট স্বর্নের আইপ্যাড

“বুর্জ আল আরব” এর প্রতিটি রুমে রয়েছে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের আইপ্যাড। হোটেলটির নানা তথ্যাদি সহ বিভিন্ন সেবাসমূহ আইপ্যাডে দেয়া থাকবে। হোটেল এর রেস্তোরাগুলোর খাবার মেনুসহ সব ধরণের সুবিধাদি আইপ্যাড থেকে একজন অতিথি জেনে নিতে পারবেন। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং অতুলনীয় গুণগত মানের যা অতিথিদের সন্তুষ্ট করবে। যদি কোন অতিথি হোটেলে থাকাকালীন ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের আইপ্যাড নিজের করে পেতে চান তবে তাকে ১০,২০০ ডলার অতিরিক্ত গুণতে হবে। স্বর্ণের আইপ্যাড ছাড়াও স্বর্ণের আইপ্যাড মিনি, গোল্ড আইফোন ৫ এবং গোল্ড ব্ল্যাকবেরি কিউ টেনও কিনতে পারবেন বিলাসী অতিথীরা।

নামকরণ ও অবকাঠামো

“বুর্জ আল আরব” এর অর্থ হচ্ছে আরবের সম্মান। অন্যভাবে, বুর্জ শব্দটার বাংলা অর্থ ‘স্তম্ভ’ কিংবা ইংরেজীতে ‘Tower’, বুর্জ আল আরব এর সম্পূর্ণ অর্থ দাঁড়ায় ‘আরবের স্তম্ভ’, সত্যিই ভবনটি জুমেরিয়া বীচের পাড়ে আরবের বিলাস-ব্যসন-বিত্ত-বৈভবের প্রতীকি স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ৩২১ মিটার (৯১৯ ফিট) উচ্চতা বিশিষ্ট বিল্ডিং টি হোটেল হিসেবে ব্যবহৃত ভবনগুলোর মাঝে চতুর্থ সর্বোচ্চ, জুমেরিয়া বীচের পাশে সমুদ্রের মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বীপের উপর হোটেলটির অবস্থান। আরবের পুরনো পালতোলা জাহাজের কাঠামোর অনুকরণে বানানো ভবনটি আরবের ঐতিহ্যের প্রতিনিধি। আরববিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি আরব আমিরাতের শাসক শেখ নাহিয়ানের পারিবারিক সম্পত্তি বুর্জ আল আরব।

পৃথিবীর সেরা হোটেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ

ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর বিলাসবহুল ভ্রমন বিষয়ক ম্যাগাজিন,আলট্রা ট্রাভেল-এর পাঠকদের ভোটে “বুর্জ আল আরব” পৃথিবীর একটি বিলাস বহুল হোটেল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। হোটেলটি ‘বেষ্ট হোটেল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং বেষ্ট হোটেল ইন দ্য মিডল ইষ্ট’ ক্যাটাগরিতে খুব সম্মানজনক দুটি আলট্রা (Ultimate Luxury Travel Related Award) পুরস্কার পেয়েছে।

বিশ্বের সেরা রেষ্টুরেন্টগুলোও রয়েছে এখানে

বিশ্বের সেরা এই হোটেলে রয়েছে বিশ্বের সেরা রেষ্টুরেন্টগুলোও। এই হোটেলে ২টি রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘আল মুনতাহা’, যার বাংলা অর্থ সর্বোচ্চ। এর অবস্থান পার্সিয়ান গালফের ২০০ মিটার উপরে, যেখান থেকে পুরো দুবাইকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেয়া যায়। এটি একটি ক্যান্টিলিভারের উপরে স্থাপিত যেটি মাস্তুল থেকে ২৭ মিটার দূরে প্রসারিত, একটি প্যানারোমিক এলিভেটরে সেখানে যাওয়া যায়।

আল মুনতাহা রেষ্টুরেন্ট

অপর রেষ্টুরেন্টটি হলো ‘আল মাহারা’, যার বাংলা অর্থ ঝিনুক। এই হোটেলটিতে যেতে হয় একটি সিমুলেটেড সাবমেরিন ভয়েজের মাধ্যমে। এটি মূলত একটি বিশাল সমুদ্রের পানির অ্যাকুরিয়াম, যেখানে প্রায় ৩৫,০০০ ঘন ফুট পানি আছে। পানির ট্যাঙ্কটি এক্রিলিক গ্লাসের তৈরী যেন তা ম্যাগনিফিকেশন এফেক্ট দূর করে, গ্লাসগুলোর পুরুত্ব ৭.৫ ইঞ্চি।

আল মাহারা রেষ্টুরেন্ট

রয়েছে টেনিস কোর্টও
ভবনের শীর্ষে ক্যান্টিলিভারের সহায়তায় একটি হেলিপ্যাড বসানো হয়েছে। এই হেলিপ্যাডে হোটেলটির ইতিহাসে স্মরনীয় কয়েকটি পাবলিক ইভেন্ট হয়েছে- আইরিশ গায়ক রোনান কিটিং তার মিউজিক ভিডিও’র শূটিং করেছেন এই হেলিপ্যাডে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে গল্‌ফার টাইগার উড এই হেলিপ্যাড থেকে পার্শিয়ান গালফ সাগরের দিকে বেশ কয়েকটি বল মেরেছেন। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারীতে টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসি এবং রজার ফেদেরার এই হেলিপ্যাডে একটি ম্যাচ খেলেছেন। তখন অস্থায়ীভাবে হেলিপ্যাডটিকে একটি ঘাসবহুল টেনিস কোর্টে রূপান্তর করা হয়েছিল। হেলিপ্যাডে কোন সীমানা কিংবা বেড়া নেই, তাই টেনিস বল যদি একবার কোর্টের বাইরে চলে যায় তবে সেটি ফিরিয়ে আনার কোন উপায় নেই।

বিশ্বের সর্বোচ্চ লবি

বুর্জ আল আরবে আছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ আট্রিয়াম বিশিষ্ট লবি, ১৮০ মিটার (৫৯০ ফিট উচ্চতায়)। আট্রিয়ামটির অবস্থান ভবনটির V আকৃতির কাঠামোর মাঝখানে। আট্রিয়ামটিকে ঘিরেই হোটেলটির সম্পূর্ণ ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিকশিত হয়েছে এবং আট্রিয়ামের ফাঁকা স্থানেই ইন্টেরিয়রের এক-তৃতীয়াংশ স্থান ব্যয় হয়েছে। আট্রিয়ামের জন্য যে ফাঁকা স্থান রাখা হয়েছে তাতে সহজেই দুবাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বিল্ডিংটি এঁটে যেতো।

নির্মাণগত কিছু তথ্য

বুর্জ আল আরবের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে এটি উদ্বোধন হয়। এটি ৩২১ মিঃ (১০৫৩ ফুট) লম্বা এবং ২৮ তলা বিশিষ্ট। এটির আয়তন ৭০,০০০ বর্গ মিঃ। আরবের ‘দাউ’ নামক নৌযানের মাস্তুলের সাথে সাদৃশ্য রেখে এর কাঠামো নকশা করা হয়। মূল মাস্তুল কাঠামো থেকে ইংরেজী ‘V’ অক্ষরের মত এর কাঠামো দু’পাশে বিস্তৃত। সব মিলিয়ে কাঠামোগুলোর আবদ্ধ স্থানটি ত্রিভূজাকৃতির, ত্রিভূজের তিনবাহুর মধ্যবর্তী স্থলে আছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ আট্রিয়াম। ভবনটি তে লেগেছে ৭০,০০০ ঘনমিটারেরও বেশী কংক্রীট এবং ৯,০০০ টন স্টীল।

নির্মাণে কত টাকা ব্যায় হয়েছিল?

বিশ্বের সেরা এই হোটেলটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৪৮ কোটি সাতাশি লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা।

সমুদ্রের তলদেশের ভিত্তি নির্মাণ করতেই লেগেছে ৩ বছর

“বুর্জ আল আরব” হোটেলের সমুদ্রের তলদেশের ভিত্তি নির্মাণ করতে ৩ বছর সময় লেগেছে। অথচ ‍সম্পূর্ণ ভবনটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ৩ বছরেরও কম। সমুদ্রের মাঝখানে এর ভিত্তির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সমুদ্রের নিচের বালির মধ্যে ২৩০টি ৪০ ফুট দীর্ঘ কংক্রিটের খুঁটি প্রবেশ করানো হয়।

ভবনটি নির্মাণে যারা ছিলেন

ভবনটির স্থপতি ছিলেন জন রাইট। ভবনটির স্থাপত্য পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল অ্যাটকিনস্‌, ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। নির্মাণ ঠিকাদারী ছিল সাউথ আফ্রিকান কন্ট্রাক্টর ম্যুরে এন্ড রবার্টস্‌। হোটেলটির ইন্টেরিয়র ডিজাইন করেছেন KCA ইন্টারন্যাশনালের ডিজাইন প্রিন্সিপাল খুয়ান চিউ।