রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাতৃগর্ভ থেকে এ ধরণীতে শুভাগমনের সময় নবুয়্যতের কিছু আলামত প্রকাশ পায়। স্বপ্নকালীন সময়ে মা আমিনা যে নাম রাখার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন, সে ব্যাপারে তাঁর বিখ্যাত জীবনীগ্রন্থসমূহের বর্ণনাগুলোর কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-
নবুয়্যতের আভাস-
ক. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভগমন মূহূর্তে কিসরার প্রসাদের চৌদ্দটি সৌধচূড়া ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। প্রাচীন পারসিক যাজকদের উপাসনালয়ে যুগ যুগ ধরে প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুণ্ডগুলোও নিভে যায়। বাহিরা পাদ্রীদের ধর্মকর্মে ব্যস্ত গির্জাগুলোর অবস্থা হয়ে পড়ে নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ। যা ছিল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়্যতের প্রাক-প্রাথমিক নির্দশন।
খ. হাসান বিন সাবিত বলেন, আমি তখন সাত বছরের বালক হলেও বেশ শক্তিশালী, লম্বা এবং স্মরণ রাখার অবস্থায় পৌছেছি। ঐ সময় এক ইহুদি ইয়াসরেবের একটা দুর্গে আরোহনপূর্বক ‘ওহে ইহুদি সমাজ! বলে চিৎকার করছিল। লোকেরা তাকে ঘিরে বলল তোমার কি হয়েছে? সে বলল, ‘আজ রাতে আহমাদের জন্মের সেই নক্ষত্র উদিত হয়েছে।
শুভাগমন-
রবিউল আউয়াল মাসের দ্বাদশ রজনী অতিক্রান্ত হওয়ার মূহূর্তে সোমবারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরণীতে শুভাগমন করেন। তাঁর শুভাগমনে মা আমিনা তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিবের নিকট এ বলে খবর পাঠালেন যে, আপনার এক পৌত্র জন্মেছে। আসুন, তাঁকে দেখুন। আবদুল মুত্তালিব এসে তাঁকে দেখলেন। তখন মা আমিনা স্বপ্নে আদিষ্ট ঘটনা এবং নামের ব্যাপারে যা বলা হয়েছে তা তাকে জানালেন।
দাদা আবদুল মুত্তালিব সদ্য নবজাতককে নিয়ে কাবা গৃহে গেলেন এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। তাঁর সার্বিক কল্যাণে দোয়া করতে থাকলেন। অতপর অত্যন্ত আনন্দ মধূর এ মূহূর্তেই তিনি পৌত্রের নাম মুহাম্মাদ রাখার সিদ্ধান্ত স্থির করলেন। আরববাসীদের নামের তালিকায় এ নামটি ছিল অত্যন্ত অভিনব একটি নাম।
সুতরাং পৃথিবীতে সকল নবজাতকের জন্ম মূহূর্তে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় এবং তার কল্যাণে দোয়া করা উচিত। যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মকালীন আদর্শও বটে। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদীকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আলোক উজ্জ্বলময় জীবনী থেকে উত্তম শিক্ষা লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।