ভারতীয় ড্রেসিংরুম কি দু’ভাগে বিভক্ত?

SHARE
dhoni koyliভারতীয় ড্রেসিংরুম কি দু’ভাগে বিভক্ত? বাহ্যিকভাবে দেখলে সেটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। অতীতেও অস্ট্রেলিয়ায় বিরাট কোহলি এবং শিখর ধাওয়ানের মধ্যে কথা কাটাকাটি সেই জল্পনা তুলে এনেছিল। এবার বাংলাদেশের মাটিতে সিরিজ হারের পর বিরাট কোহলির মন্তব্য আবারও নতুন করে ইন্ধন জোগালো সেই জল্পনায়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মানসিক দৃঢ়তা না থাকাই যে আসলে সিরিজ হারের কারণ, একথাই বুঝিয়ে দিলেন কোহলি। ইঙ্গিতটা যে ধোনির দিকে, সেটাও স্পষ্ট।

কয়েকদিন আগেই ধোনির ছোটবেলার কোচ বলেছিলেন, ‘ভারতীয় ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ধোনির জন্য অসহনীয় হয়ে উঠছে।’ সেদিনই কোহলির ছোটবেলার কোচ বলেছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটের কালো দিন। পরস্পরের মন্তব্যে যে ধোনি এবং কোহলির মধ্যে বিবাদের ইঙ্গিতই স্পষ্ট, সেটা বলা বাহুল্য। সবমিলিয়ে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে কার্যত ঠান্ডা লড়াইয়েরই আবহ চলছে। তবে সেকথা অস্বীকারই করছেন দলের কর্মকর্তারা।

কোহলি সরাসরি বলেছেন, ‘আমাদের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছেন দলের সদস্যরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছে না। প্রথম দু’টি ম্যাচে আমরা সেটা করতে পারিনি।’

প্রসঙ্গত, আগের দিনই ধোনির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সুরেশ রায়না, রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তার পরদিনই কোহলির এহেন মন্তব্যে ধোনি বনাম কোহলি, সমীকরণেরই ছায়া দেখতে পাচ্ছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট সিরিজের মাঝপথেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন ধোনি। যা উসকে দিয়েছিল ড্রেসিংরুমে কোহলির সঙ্গে অবনিবনার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধোনি, এমন বিতর্ক।

আবার বাংলাদেশেও ধোনি প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন। যা কার্যত অস্ট্রেলিয়ার পথে হাঁটারই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি এমনই, যেখানে ভারতীয় কার্যত দু’টি শিবিরে বিভক্ত বলেই মনে হচ্ছে। যেখানে একদিকে রয়েছেন ধোনি এবং তার অনুগামীরা। অন্যদিকে রয়েছেন কোহলি।

রায়না সোজাসুজিই ধোনির পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘যাই হোক না কেন, ধোনিকে অসম্মান করা যায় না কোনওভাবেই। ওর কৃতিত্বের কথা মাথায় রাখতে হবে। ভারতকে অনেক ট্রফি দিয়েছে ধোনি। মানুষ হিসেবেও ভালো। একটা সিরিজের মাধ্যমে কোনোভাবেই ওকে বিচার করা যায় না।’

প্রসঙ্গত, বুধবারের ম্যাচে ধাওয়ানের তুলনায় ধোনির ইনিংস অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উল্টোদিকে কোহলি কিন্তু যথারীতি ব্যর্থ। একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থতাই সার তার। এমন ম্যাড়মেড়ে পারফরম্যান্স সত্ত্বেও কেন কোহলিকে দলে রাখা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে টিকিট সমস্যায় বৃহস্পতিবার ধোনি এবং কোহলি বাদে বাকি দলকে থেকে যেতে হলো বাংলাদেশেই। বৃহস্পতিবার দুপুরের বিমানে ঢাকা থেকে ধোনি এবং কোহলি ভারতে ফেরেন। দলের ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে জানালেন, দলের বাকি সদস্যরা সকলেই শুক্রবার দেশে ফিরবেন। প্রত্যেক ক্রিকেটারই নিজের নিজের শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।

শেষ দু’টি ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দলকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি। দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে জেতাতে না পারলেও তার ইনিংস চাঙ্গা করেছিল দলকে। অন্যদিকে শেষ ম্যাচে কিন্তু ভারতের জয়ের নেপথ্যে অনেকেই ধোনির অবদান দেখছেন।

সেকথাও উল্লেখ করেন রায়না। তিনি বলেন, ‘যেভাবে শেষ দু’টি ম্যাচে ধোনি ব্যাট করেছে, তাতে প্রমাণিত সত্য হলো চার নম্বর জায়গাটা ধোনিরই। দীর্ঘদিন ধরেই ও যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়েছে। আজও সেই কাজই করেছে ও। শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ওর জুটিই আমাদের চাঙ্গা করে দিয়েছিল।’

এদিকে বাংলাদেশের কাছে হারের জেরে আই সি সি ক্রমতালিকায় পয়েন্ট খোয়াল ভারত। যদিও একদিনের ক্রমতালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে দল। কিন্তু দুই পয়েন্ট খুইয়েছে তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশে সিরিজ জয়ের সুবাদে ক্রমতালিকায় এক ধাপ উঠে এল। বৃহস্পতিবার সংশোধিত তালিকায় বাংলাদেশ উঠে এলো সপ্তম স্থানে।