জেমস ক্যামেরনের মহাকাব্যিক ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ গত ১৯ ডিসেম্বর বিশ্বজুড়ে মুক্তি পেয়েছে। প্রথম দুই কিস্তির আকাশছোঁয়া সাফল্যের পর দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল অনেক। তবে মুক্তির পরপরই মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে সিনেমাটি। দর্শকদের বড় অংশের দাবি পর্দায় জাদুকরী দৃশ্য তৈরি করলেও গল্পের গভীরতায় এবার খেই হারিয়েছেন ক্যামেরন।
এবারের পর্বে প্যান্ডোরার নতুন এক গোষ্ঠীকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন পরিচালক। তারা হলো ‘মাংকওয়ান’ বা আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মানুষ। আগের পর্বে পানির নিচের মেটকায়িনা গোষ্ঠীকে দেখা গেলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার কেবল মানুষ বনাম নাভি নয়, বরং নাভিদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সংঘাতও প্রধান্য পেয়েছে ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ সিনেমায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের বড় একটি অংশ সিনেমাটিকে ‘একই গল্পের পুনরাবৃত্তি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ‘পুরনো মদ নতুন বোতলে’ এমন মন্তব্যে ভরে গেছে এক্স (সাবেক টুইটার) ও ফেসবুক। দর্শকদের মতে, জেমস ক্যামেরন কেবল ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বা ভিএফএক্স-এর ওপর মাত্রাতিরিক্ত জোর দিয়েছেন, যেখানে আবেগের জায়গাটি ছিল খুবই নড়বড়ে।
সিনেমাটি দেখে এক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, ‘জেমস ক্যামেরন গত ৩০ বছরে নতুন কিছু তৈরি করতে পারেননি। একই সিনেমা, একই গল্প, শুধু ভিএফএক্স পাল্টে গেছে।’ অন্য এক ক্ষুব্ধ দর্শক লিখেছেন, ‘‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ আসলে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি ‘পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ ছাড়া আর কিছু নয়। এটি ক্লান্তি ধরিয়ে দেওয়ার মতো একটি অভিজ্ঞতা।’
গল্প নিয়ে সমালোচনা থাকলেও সিনেমাটির কারিগরি দিক ও ভিজ্যুয়াল স্পেশাল ইফেক্টের প্রশংসা করতে ভোলেননি সমালোচকরা। অনেকেই মনে করছেন, বরাবরের মতো এবারও সিনেমাটি ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ক্যাটাগরিতে অস্কারের দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে। কিন্তু ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিটের দীর্ঘ ব্যাপ্তি অনেকের কাছেই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বক্স অফিসের হালচাল সমালোচনা থাকলেও বক্স অফিসে কিন্তু দারুণ সূচনা করেছে ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই সিনেমাটি আগের দুই কিস্তির মতো ২ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে পৌঁছাতে পারবে কি না, তা নিয়ে এখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে দ্বিতীয় কিস্তির তুলনায় উদ্বোধনী আয়ের গ্রাফ এবার কিছুটা নিম্নমুখী।



