মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বিশ্বফুটবলে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন বার্সেলোনার বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামাল। অসাধারণ দক্ষতা, পজিশনিং ও কৌশলে অনেকেই তাকে তুলনা করছেন বার্সার আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসির সঙ্গে। তবে ইয়ামাল নিজেই সেই তুলনায় বিশ্বাসী নন।
গতকাল ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে মেসির সঙ্গে তুলনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইয়ামাল বলেন, ‘আমি নিজেকে কারো সঙ্গে তুলনা করি না—আর মেসির সঙ্গে তো নয়-ই।
’ তিনি মেসিকে ‘ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়’ বলে উল্লেখ করেন।
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ইয়ামাল যা অর্জন করেছেন, তা এককথায় অবিশ্বাস্য। ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বার্সেলোনার হয়ে তার ১০০তম ম্যাচ, যেখানে তিনি দলের হয়ে ২২তম গোলটি করেছেন। পাশাপাশি স্পেনের জার্সিতে ১৯ ম্যাচে তিনি ৪টি গোল করেছেন।
তবে ইয়ামালের কৃতিত্ব এখানেই থেমে নেই—তার নামের পাশে রয়েছে ২৭টি অ্যাসিস্ট।
এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ফুটবল কিংবদন্তি লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রেখেছিলেন ১৮ বছর বয়সের পর। অথচ ইয়ামাল তার ১৭তম জন্মদিনের পরদিন ইউরো জিতেছেন। মেসি ১৮ বছর হওয়ার আগে এক গোল করেছিলেন।
কিন্তু ইয়ামাল তার বয়সের তুলনায় অনেক বেশি অর্জন করেছেন।
১৭ বছর বয়সে মেসি ছিলেন কেবল একজন সম্ভাবনাময় তরুণ, তখনো তাকে বিশ্বসেরাদের একজন হিসেবে ধরা হতো না। অথচ সেই একই বয়সে ইয়ামাল ইতিমধ্যেই নিজেকে বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের কাতারে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেছেন। তবে ইয়ামাল মেসির সঙ্গে নিজের কোনো তুলনা টানতে একদমই রাজি নন। ইয়ামাল বলেন, ‘তুলনার কোনো মানে হয় না, বিশেষ করে মেসির সঙ্গে তো নয়।
আমি শুধু ফুটবল উপভোগ করতে চাই এবং নিজের মতো করেই খেলতে চাই।’
মেসির সঙ্গে ইয়ামালের মিল খুঁজে পাওয়া যায় একাধিক জায়গায়। দুজনেই উঠে এসেছেন বার্সেলোনার ঐতিহাসিক লা মাসিয়া একাডেমি থেকে এবং খেলেন ডান উইংয়ে, প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ঝড় তোলার দক্ষতা নিয়েই। সম্প্রতি তাদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী সম্পর্কও সামনে এসেছে। ২০০৭ সালে ইউনিসেফের একটি দাতব্য ফটোশুটে মাত্র কয়েক মাসের শিশু ইয়ামালকে কোলে নিয়ে গোসল করাতে সাহায্য করেছিলেন ২০ বছর বয়সী লিওনেল মেসি। সেই ছবিটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
স্পেনের মাতারো শহরে ইউনিসেফের একটি র্যাফেলের মাধ্যমে ওই ফটোশুটের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে ইয়ামালের পরিবার বসবাস করতেন। তখন কি কেউ জানত, সেই ছোট্ট শিশু একদিন মেসির উত্তরসূরি হয়ে ফুটবল দুনিয়ায় হৈচৈ ফেলে দেবে?