গাজায় যুদ্ধ অবসান সরকারকে চিঠি ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর

SHARE

গাজায় বন্দি জিম্মিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার প্রদান ও সেখানে যুদ্ধের অবসানের দাবিতে ইসরায়েলের সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান এহুদ বারাকসহ ১ হাজার ৫২৫ জন সাবেক ও সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য।

এহুদ বারাক ২০০৭ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার আগে ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন সেনাপ্রধান।

এহুদ বারাকের পাশাপাশি চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সাবেক সেন্ট্রাল কমান্ডার চিফ আমরাম মিৎজনা, সাবেক চিফ অব স্টাফ ড্যান হালুৎজ, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক প্রধান আমোস মাল্কা, সাবেক সেন্ট্রাল কমান্ড অভি মিজরাহি এবং ১৪ তম আর্মোর্ড ব্রিগেডের কমান্ডার আমনন রিফের নাম উল্লেখযোগ্য।

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে যারা বর্তমানে চাকরিরত আছেন, তাদের প্রায় সবাই বাহিনীর ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান ইউনিটের। এই স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে জেনারেল থেকে শুরু করে সাধারণ পদাতিক— সব পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছেন।

চিঠিতে সরকারের উদ্দেশে বলা হয়েছে, “গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন রক্ষা ও তাদের মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিন। এমনকি যদি তাদের মুক্তির জন্য যুদ্ধ থামানোর প্রয়োজন হয়, তবে তা ই করুন।”

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ১ হাজার যোদ্ধা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় মোট নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন। সেই সঙ্গে ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।

আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। এ অভিযানে গত ১০ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

যাদেরকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস, তাদের মধ্যে অনেককেই ইতোমধ্যে মুক্তি দিয়েছে গোষ্ঠীটি। কয়েক জন জিম্মি ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গোলার আঘাতে নিহত হয়েছেন। বর্তমানে সেখানে অন্তত ৩৫ জন জিম্মি জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই জিম্মিদের মুক্তির দাবি দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে ইসরায়েলে। দেশটির জাতীয় দৈনিক মারিভের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে এ পর্যন্ত সরকারের কাছে ১০টি চিঠি জমা পড়েছে। এসব চিঠির মধ্যে দু’-তিনটি বাদে বাকি সবই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের।

চিঠির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সাক্ষরকারীদের মধ্যে যারা বর্তমানে চাকরিরত আছেন, তাদের বরখাস্ত করা হবে।