কুমিল্লায় নির্বাচনি আমেজ, মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

SHARE

কুমিল্লায় দেদার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। প্রতিদিনই রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, সামাজিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা, ওয়াজ মাহফিলসহ নানা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন এ দুটি শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এতে দলগুলোর অভ্যন্তরে নির্বাচনি আমেজ বিরাজ করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ দুটি দলই তাদের নির্বাচনি মাঠ প্রস্তুত করছে। এ ছাড়া মাঠের আধিপত্য, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল এবং নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিকল্প নেই।

তাই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই নির্বাচনমুখী হচ্ছে প্রধান এ দুটি রাজনৈতিক দল। এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা না পেলেও বিএনপি-জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠ গোছানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লায় ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ছাড়া পুরোদমে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে সব রাজনৈতিক দল।

সচেতন মহলের দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদার মনোভাবের ফলে মুক্ত গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ পাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে গণতন্ত্রকামী মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটতে শুরু করেছে। জেলায় রাজনৈতিক মাঠে তৎপরতায় শীর্ষে বিএনপি জামায়াত। দুটি দলই তাদের সাংগঠনিক কাঠামো শক্ত করতে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা না পেলেও বিএনপি-জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন পুরোদমে মাঠে কাজ করছেন। এতে রাজনীতির মাঠে বাড়তি আমেজ সৃষ্টি হচ্ছে। জেলার ১১টি সংসদীয় আসনেই বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন। এ দুটি দলই পৃথক কর্মসূচি নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জেলার অধিকাংশ আসনে বিএনপির সমান্তরাল (পেরালাল) প্রার্থীরা কৌশলে গ্রুপিং দ্বন্দ্বে জড়িত থাকলেও জামায়াতের কর্মকাণ্ড ভিন্ন। জামায়াতের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। সূক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে তারা সামাজিক নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়ার মিশন পরিচালনা করছেন।

এদিকে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আসনভিত্তিক মাঠে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও দলীয় কঠোর বার্তার কারণে প্রকাশ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িত হচ্ছেন না। সব মিলিয়ে নির্বাচনি মিশনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে জেলার বিএনপি জামায়াত।

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, বিএনপি উদার গণতান্ত্রিক দল। আমরা জনগণের ভোটাধিকার এবং স্বচ্ছ নির্বাচন ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা জনসাধারণের আস্থা অর্জনে কাজ করছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনমুখী দল। ঘুরেফিরে নির্বাচনের দিকেই যাবে আমাদের ট্রেন-এটাই বাস্তবতা।

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি বলেন, অনেক বছর পর মুক্ত আবহে রাজনীতি করছি। আমাদের নেতাকর্মীরা অনেকটাই প্রাণবন্ত। জেলার প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও এখন সবাই দল গোছাতে ব্যস্ত। তাছাড়া দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে চলতে হচ্ছে। কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহিদ বলেন, আমরা মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করি। অনেক বছর পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা একটা দানবীয় ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্তি লাভ করেছি। এখন আমরা আমূল সংস্কারে কাজ করছি। বিশেষ করে দল গোছানোর পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সময় পার করছি। নির্বাচন এলে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব।