এখনকার মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন। তারা ঘি ও মাখনকে খাদ্যতালিকায় রাখেন। তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন— সারা দিনে যদি পরিমিত ঘি খাওয়া যায়, তা হলে শরীরের ওজন বাড়বে না। আপনাকে নিয়ম করে সচেতনতা অবলম্বন করে খেতে হবে।
আমরা মূলত গরম ভাতে এক চামচ ঘি খাই। এই এক চামচ ঘিয়ের স্বাদই আলাদা। তবে ঘি যে শুধু স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়, তা নয়। ঘিয়ের স্বাস্থ্যগুণও বিপুল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ ঘি, যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে করে হাড় মজবুত হয়, শরীরের প্রতিটি কোষ সচল রাখে। জেনে নেওয়া যাক দিনে কতটুকু ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।
এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেছেন, সারা দিনে যত ক্যালোরি খাওয়ার কথা, তার ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসা উচিত ফ্যাট থেকে। তার মধ্যে ১০ শতাংশের কম যদি স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে আসে, তা হলে ক্ষতি নেই। বরং তা উপকারই করবে। এখন যেহেতু এক চামচ ঘিয়ের মধ্যে থাকা ১৫ গ্রাম ফ্যাটের মধ্যে ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, তাই দিনে দুই চামচ ঘি খাওয়া যেতেই পারে।
আর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পছন্দের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। তাই বলে ফ্যাট খাওয়া একেবারে ছেড়ে দেওয়ারও দরকার নেই। শম্পা বলেন, মাখন না খেলেও ঘি কিন্তু খেতে পারেন। ঘিয়ের মধ্যে যে ধরনের ফ্যাট রয়েছে, তা হার্টের জন্য ভালো। সুষম খাবারের পাশাপাশি, দিনে দুই চামচের কম দেশি ঘি খেলে ওজন কমে। কারণ এতে আছে ‘কনজুগেটেড লিনোলেইক অ্যাসিড’। ডায়াবেটিস ঠেকানোর পাশাপাশি ওজন কম রাখতেও সাহায্য করে এ অ্যাসিড। ক্যানসার ও ইস্কিমিক হৃদ্রোগ প্রতিরোধেও ঘি সাহায্য করে।
তিনি বলেন, হার্টের রোগ, কোলেস্টেরল না থাকলে দিনে দুই চামচ ঘি খেলে কোনো সমস্যা নেই। অনেক সময় বনস্পতির সঙ্গে কৃত্রিম স্বাদগন্ধ মিশিয়ে দেশি ঘি বলে চালানো হয়। মানুষ না বুঝে তা খান। আর তাতেই ক্ষতি হয় শরীরের। ঘি খেতে ইচ্ছে হলে ঘরে বানিয়ে নিন। সেই উপায় না থাকলে বিশ্বস্ত জায়গা থেকে কিনুন। সেই ঘি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। রান্নায় পরিমিত ঘি দিলে ঘিয়ের ভিটামিন, খনিজ উপাদানগুলো সবজিতে মিশে যায়। তখন ভিটামিনের গুণে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে খাবার। রান্না করার সময় ঘিয়ের রাসায়নিক গঠন চট করে ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয় না। তাই সেদিক থেকেও ঘি উপকারী।