বাদ পড়ছেন স্মৃতি

SHARE

irani mp indiaআরও দুঃসময় কি অপেক্ষা করছে স্মৃতি ইরানির জন্য? দলের জাতীয় কর্মসমিতি থেকে বাদ পড়া এবং সিসিটিভি বিতর্কের পর এবার বিশেষ সূত্রে খবর, ভারতের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়টাও হাতছাড়া হতে পারে তার৷ তিনি অভিনেত্রী, এই যুক্তি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পরবর্তী রদবদলে স্মৃতিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় দেওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট, যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে অরুণ জেটলির হাতে রয়েছে৷

২০ এপ্রিল সংসদের অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা আছে৷ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক পাওয়ার পর থেকেই অবশ্য স্মৃতিকে নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছিল, হায়ার সেকেন্ডারি পাশ স্মৃতিকে কী করে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়? এর পর হলফনামা বিতর্ক শুরু হয়৷ দু’টি নির্বাচনে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দু’রকমের হলফনামা দিয়েছিলেন তিনি৷ মন্ত্রী হিসেবেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউজিসি, আইআইটি-র ডিরেক্টরদের সঙ্গে টানা সংঘাতে জড়িয়েছেন স্মৃতি৷ দলের মধ্যেও মীনাক্ষী লেখির মতো কিছু সাংসদ তার বিরোধিতা করেছেন৷

কিন্তু এত বিতর্কের মধ্যেও স্মৃতির মন্ত্রণালয় বদল হয়নি৷ তবে প্রথম ধাক্কাটা তিনি খেয়েছেন জাতীয় কর্মসমিতি থেকে বাদ পড়ায়৷ মন্ত্রণালয় বদলানো হলে ফের ধাক্কা খাবেন স্মৃতি৷ শেষ পর্যন্ত যদি প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিকে অন্য মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেন, তবে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়  কে পেতে পারেন? বিজেপির অন্দরে তিনটি নাম শোনা যাচ্ছে-রবিশঙ্কর প্রসাদ, হর্ষবর্ধন এবং মনোজ সিনহা৷ হর্ষবর্ধন এখন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে নেই৷ কিন্তু সঙ্ঘ চাইছে, তাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক৷ দলের মধ্যে রবিশঙ্কর প্রসাদ মন্ত্রী ও প্রশাসক হিসেবে যথেষ্ট দক্ষ বলে পরিচিত৷ বর্তমান রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহাও সঙ্ঘ নেতাদের পছন্দের মন্ত্রী৷ তবে শুধু স্মৃতিই নন, মন্ত্রণালয় পরিবর্তন হতে পারে গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী বীরেন্দ্র সিংয়েরও৷ ভি কে সিং-কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থেকে সরিয়ে অন্য মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে৷ আর মন্ত্রিসভায় সামিল হতে পারেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ও শিবসেনার অনিল দেশাই৷

কেন এই মন্ত্রণালয়ের বদলের সম্ভাবনা? গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী বীরেন্দ্র সিং জমি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে বিতর্কে জড়ান৷ রটনা হয়েছিল, হরিয়ানার এই কৃষকনেতা নতুন আইনের পক্ষপাতী নন৷ সে জন্য তিনি এই আইন পাশ করার পক্ষে প্রচারের ক্ষেত্রে খুব একটা উদ্যোগী হননি৷ বিজেপি সূত্রে এখন বলা হচ্ছে, এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের তিনি ঠিকমতো সামলাতে পারছেন না৷ সে জন্যই তাকে কম গুরুত্বের মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে৷

প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিং-ও মন্ত্রী হওয়ার পর একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন৷ বর্তমান সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে টুইটারে অভিযোগ করে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেন৷ পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে এবং পরের দিন টুইট করে ফের বিতর্কে জড়ান৷ সর্বশেষ সংযোজন সংবাদমাধ্যমকে কটাক্ষ করে টুইট৷ সেটাও তার দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে৷ কাজেই তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ে সরানো হতে পারে৷ জম্মু ও কাশ্মীরে পিডিপি-র সঙ্গে বিজেপির জোট সরকার হওয়ার সময়ই ঠিক ছিল যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় মেহবুবা মুফতি আসবেন৷ শিবসেনার অনিল দেশাইয়েরও গতবারই মন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল৷ শপথ নেওয়ার জন্য তিনি দিল্লি পৌঁছেও যান৷ কিন্ত্ত সে সময় শিবসেনা -বিজেপির দ্বন্দ্ব চলছিল৷ তাই উদ্ধব তাকে শপথ নিতে দেননি৷ এবার অনিল সুযোগ পেতে পারেন৷

পরিস্থিতি যা, ভারতের মানুষের নজর কিন্তু থাকবে স্মৃতির উপরেই৷