ইংল্যান্ডের সাফল্যের ফর্মুলা দিলেন স্টিফেন হকিং

SHARE

৪৮ বছরের বিশ্বকাপ খরা কাটাতে দলের সঙ্গে মনোবিদ রাখার ওপর জোর দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড ম্যানেজার রয় হজসন। এবার বিশ্বকাপ জেতার জন্য এই ব্রক্ষ্মাণ্ডের শ্রেষ্ঠ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের গবেষণার অঙ্কও ঢুকে পড়ল হজসনের নোটবুকে!image_83843_0

প্রফেসর হকিং গত ৪৮ বছরে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স গত এক মাসে পর্যালোচনা করে হজসনকে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বকাপ জিততে হলে বেশ কিছু ফ্যাক্টরকে এখন থেকেই গুরুত্ব দিয়ে রপ্ত করে নিক রুনিদের ‘থ্রি লায়ন্স’ ব্রিগেড। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সাফল্যের জন্য হকিংয়ের প্রেসক্রিপশন, ৪-৪-২ নয়, ব্রাজিলের মাটিতে রুনিদের ফর্মেশন হোক ৪-৩-৩। জার্সির রং হোক লাল। আর বিশ্বকাপে ইংরেজদের ‘ব্যথা’ পেনাল্টির সময় তা মারতে দেওয়া হোক কোনো সোনালি চুলের ফুটবলারকে। সঙ্গে সতর্কবার্তা, “বেলোহরাইজন্তের মাঠে কোস্তারিকার বিরুদ্ধে ফুটবল যুদ্ধ সহজ হলেও, মানাউসে ইতালি ম্যাচ কিন্তু সহজ হবে না।”

এখানেই শেষ নয়, প্রফেসর হকিং আরও জানিয়েছেন, আমাজনের রেন ফরেস্ট অঞ্চলের উষ্ণতা বিশ্বকাপের সময় পাঁচ ডিগ্রি বেড়ে গেলেই ইংল্যান্ডের ব্রাজিল থেকে কাপ হাতে হিথরোতে ফেরার সম্ভাবনা কমে যাবে ৫৯ শতাংশ। আর কম উচ্চতায় দুপুর তিনটে থেকে পাঁচটার মধ্যে খেলা শুরু হলে লাভ ইংল্যান্ডেরই বলে মনে করেন তিনি।

ইংরেজদের জার্সির রং প্রসঙ্গেও হকিং-এর মন্তব্য, “লাল জার্সি পরে খেললে ইংল্যান্ডের জেতার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেশি। কারণ লাল রং সব সময়ই আগ্রাসী মনোভাব, আত্মবিশ্বাস, ম্যাচে আধিপত্য বাড়ায় ইংরেজদের।”

গবেষণায় রেফারিং প্রসঙ্গও বাদ দেননি হকিং। তার কথায়, “ইউরোপের রেফারিরা ইংল্যান্ডের ম্যাচ পরিচালনা করলে ইংল্যান্ডের ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা ৬৩ শতাংশ। সেখানে অন্য মহাদেশের রেফারিদের হাতে রুনিদের জয়ভাগ্য খুলেছে মাত্র ৩৮ শতাংশ ক্ষেত্রে।” কেন? হকিংয়ের মন্তব্য, “ইউরোপের রেফারিরা ইংলিশ ফুটবলের প্রতি সহানুভূতিশীল।”

ইংল্যান্ডের বেটিং ফার্ম প্যাডি পাওয়ারের জন্য করা এই গবেষণায় ফুটবলারদের স্ত্রী এবং বান্ধবী নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়ার প্রসঙ্গও রেখেছেন দুনিয়াখ্যাত এই পদার্থ বিজ্ঞানী। তার মতে, “ফুটবলাররা বৌ না বান্ধবী কাকে নিয়ে থাকছে সেটা ফলাফলের ওপর কোনো প্রভাবই ফেলে না।”

আর যে যন্ত্রণা এড়াতে হজসন রুনিদের প্রথম দিন থেকেই অনুশীলনে পেনাল্টি মারার দিকে জোর দিয়েছেন তা আরও নিখুঁত করার জন্য পদার্থবিজ্ঞানীর টিপস, “গতিই আসল কথা। সঙ্গে মেশাতে হবে প্লেসমেন্ট। তিন স্টেপ দৌড়ে পোস্টের উপরদিকে ডান বা বাঁ দিকের কোণ বরাবর মারলে বল গোলে ঢুকবেই।” সঙ্গে আরও বলেন, “কালো চুলের ফুটবলারের বদলে সোনালি চুল বা চকচকে টাকওয়ালা ফুটবলাররাই পেনাল্টি ভালো মারে। তাই ওদের সুযোগ দিলেই ভাল।” আর টাইব্রেকারের সময় ইংরেজ গোলকিপার জো হার্টের জন্য হকিংয়ের গবেষণালব্ধ মতামত, “পেনাল্টির সময় যে গোলকিপার দু’দিকেই সমান দক্ষতায় ঝাঁপাতে পারে, সে অন্য গোলকিপারদের চেয়ে ১৮ শতাংশ এগিয়ে থাকে।”

তবে এত কিছুর পরেও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতবে কি না তা নিয়ে ঝেড়ে কাশেননি প্রফেসর হকিং। নিজের ঢংয়েই বলেছেন, “ব্রাজিলকে উপেক্ষা করা যাবে না কোনো মতেই। দেখা গিয়েছে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আয়োজক দেশ। তা ছাড়া পেলের দেশ ঘরের মাঠে মনস্তাত্ত্বিক এবং পরিবেশগত সুবিধা পাবেই।” নিজের সমর্থন প্রসঙ্গে রসিকতার সঙ্গেই বলেছেন, “আমি তো চাইব ইংল্যান্ড রিও থেকে ট্রফিটা লন্ডনে নিয়ে আসুক। তবে আমার টিপসগুলো ছুড়ে ফেলে দেওয়া উচিত হবে না। যতই হোক আমি অক্টোপাস পলের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি শিক্ষিত।”

বিশ্বকাপের সময় হকিংয়ের টিপস হজসন না ইংল্যান্ডের বেটিং সিন্ডিকেট, কাদের কাজে লাগে এখন সেটাই দেখার।– সংবাদ সংস্থা।