রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। অবশ্য বৈঠকটি কোথায় হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
ট্রাম্প সোমবার বলেন, “ভাইস-প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং বিশেষ দূত উইটকফ মস্কো ও কিয়েভের সঙ্গে সমন্বয় করছেন”। তিনি আরও বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে সবাই খুবই আশাবাদী।”
তিনি জানান, পুতিন ও জেলেনস্কির প্রত্যাশিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে, যেখানে তিনি নিজেও দুই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসবেন।
এএফপিকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফোনালাপে পুতিন ট্রাম্পকে জানিয়েছেন যে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তুত। এই ফোনালাপটি হয় হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিরতিতে। পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় শীর্ষ বৈঠকের কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যদের এই বৈঠকটি হলো।
অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ ও কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে ইউক্রেন সমর্থন করছে এবং তিনি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে প্রস্তুত। “হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কাজ করার জন্য” তিনি ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে ইউক্রেন নির্বাচন আয়োজনের জন্যও প্রস্তুত।
জেলেনস্কি আরও জানান, “এখন আমাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনার সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে পুনরায় সজ্জিত করতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
এর আগে সোমবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে কিয়েভকে ক্রিমিয়া পুনর্দখলের প্রচেষ্টা ও ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা ত্যাগ করার আহ্বান জানান। জবাবে জেলেনস্কি এক্স-এ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “রাশিয়াকে কেবল শক্তির মাধ্যমে শান্তিতে বাধ্য করা সম্ভব, আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সেই শক্তি রয়েছে।”
ওয়াশিংটনে বৈঠকের পর জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বলেন, ইউক্রেনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। তবে তিনি সংশয় প্রকাশ করে বলেন, জেলেনস্কি উপস্থিত থাকলে পুতিন আদৌ বৈঠকে আসার সাহস দেখাবেন কি না, তা অনিশ্চিত।
মের্জ ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ট্রাম্পের ঘোষণা স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই আলোচনার প্রত্যাশা “শুধু পূরণই হয়নি, বরং অতিক্রম করেছে”। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় পুরো ইউরোপকেই অংশ নিতে হবে।”