দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১০ বাংলাদেশি নিহত

SHARE

bsf28চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ১০ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ সময় বিএসএফ ১৩ বাংলাদেশিকে অপহরণ ও সাতজনকে নির্যাতন করেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন- রাইটস, যশোর।

খুলনা বিভাগের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে রোববার সকালে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস, যশোর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়।

 

জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক।

লিখিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যশোরের বেনাপোল, ঝিনাইদহের মহেশপুর ও মেহেরপুর সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের হাতে জানুয়ারি মাসে তিনজন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে সাতজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তিন মাসে মেহেরপুর জেলার সোনাপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার বেনীপুর, কুষ্টিয়ার মোহাম্মদপুর ও দৌলতপুর এবং সাতক্ষীরার চান্দুরিয়া সীমান্তে বিএসএফ ১৩ বাংলাদেশিকে অপহরণ ও সাতজনকে নির্যাতন করেছে।
 
পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে অপহৃতদের ফেরত দেয় বিএসএফ। যশোরের বেনাপোল ও সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্তে গরু চরানোকালে অথবা অবৈধপথে যাতায়াতের সময় ধরা পড়ে এরা নির্যাতনের শিকার হন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তিন মাসে খুলনা বিভাগের দশ জেলায় মোট ৮৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে দুই জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১৮ জন শিশু রয়েছেন। এর মধ্যে যশোরে সবচেয়ে বেশি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। এ জেলা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন দশজন।

এ সময় বিভাগের দশ জেলায় পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৯৩ জন। পুলিশি নির্যাতনে যশোরে শাকিল আহমেদ নামে এক শিবিরকর্মীর পা ভেঙে গেছে। মিন্টু সরদার নামে যুবককে সাতক্ষীরা শহরের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পায়ে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাস ছিল রাজনৈতিক সহিংসতাপূর্ণ। এ সময় খুলনা বিভাগে মোট ৯২টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ সব ঘটনায় মোট ২৮৯ জন আহত হন। যশোর শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় মারা যান হেলপার মুরাদ। ২১ মার্চ মাগুরায় বালুর ট্রাকে দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমা হামলায় নিহত হন তিন শ্রমিক।

হরতাল ও অবরোধ চলাকালে যশোরে ৩৩টি, খুলনায় ১৭টি, ঝিনাইদহ ও মাগুরায় ১৩টি করে, বাগেরহাটে চারটি, নড়াইল, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরে তিনটি করে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। জানুয়ারি মাসে ২০টি বাস, ৪০টি ট্রাক, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আগুন ও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
 এ ছাড়া প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে এ সময় ১৩৬ জন খুন হয়েছেন। মানবপাচারের ঘটনা ঘটেছে ১২৫টি। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে ২৪টি, অপহৃত হয়েছেন ১৩০ জন।
 
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাইটস যশোরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।