রাজধানীতে লুণ্ঠনের তাণ্ডব চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
রাজধানীর জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে সোমবার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির শ্রেষ্ঠ সদস্যদের সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি বাংলাদেশে চরম আকার ধারণ করেছে। যে স্থানে সম্পদ বেশী সেখানেই লুণ্ঠন বেশী চলে। আমরা ক্রমান্বয়ে লুণ্ঠনের জাতিতে পরিণত হচ্ছি। বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় লুণ্ঠনের তাণ্ডব চলছে।
দুর্নীতি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় উৎকণ্ঠার বিষয় উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, পৃথিবীতে পর্বতের মধ্যে এভারেস্ট যেমন সবচেয়ে উঁচু অবস্থায় রয়েছে, দুর্নীতিতে বাংলাদেশেরও একই অবস্থা। দুর্নীতির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। এ লোপাট যতদিন চলতে থাকবে, ততদিন মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত সম্পদের মধ্যে ঢাকায় প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পদ একত্রিত রয়েছে। ফলে এখানে লুণ্ঠনের তাণ্ডব আরও বেশী চলছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও বেশী স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে মন্তব্য করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অবাধে দুর্নীতি চলছে। রাষ্ট্র যদি ব্যর্থ হয় তাহলে স্বাধীন যে কোনো সংস্থা তার কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। দুদকের এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে।
দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান, মহাপরিচালক ড. মো. সামসুল আরিফিন, জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্যসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানের দুর্নীতির প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা তাদের সুপারিশ তুলে ধরেন। উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হল— দুদকের নিজস্ব ওয়েবসাইটকে আরও উন্নত ও সচল করা, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে অন্যান্য সমন্বিত জেলা কার্যালয়গুলোকে ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা, স্থানীয় কার্যালয়ের লোকবল বৃদ্ধি করা, স্থানীয় উন্নয়নমূলক সভায় প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগ থেকে একটি করে জেলা কমিটি এবং প্রতিটি বিভাগ থেকে তিনটি উপজেলা কমিটিকে শ্রেষ্ঠ দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।