জিয়াউর রহমান সরাসরি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন : নানক

SHARE

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, জেনারেল জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে র সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার বড় প্রমাণ হলো হত্যার বিচার করা যাবে না ইনডেমনিটি আইন করলেন। সেই আইনের কারণে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বিচার চাইতে পারেননি। হত্যাকারীদের দেশ থেকে সহজে চলে যেতে সাহায্য করেন জিয়াউর রহমান। তিনি হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেন। মূলত জিয়াউর রহমান সরাসরি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’ শীর্ষক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান অত্যাচারের স্টিমার রোলার চালায় আমাদের ওপর। জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করলেন খুনি জিয়াউর রহমান। তার সময় বঙ্গবন্ধু নাম নেওয়া পাপ ছিল। এই ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।’
তিনি বলেন, আজকে লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে যদি জিততে না পারি বাংলাদেশ পাকিস্তানে পরিণত হবে। এই আদর্শিক লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে। আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে।
১৯৭৫ সালের স্মৃতিচারণ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে আনন্দ ছিল। কারণ, ১৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু ১৪ আগস্ট দিবাগত হটাৎ মধ্যরাতে গুলি ও কামানের শব্দে পুরো ঢাকা শহর স্তব্ধ হয়ে গেল। খবর এল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন আওয়ামী লীগের দুর্বলতা, কাপুরুষতার কারণে হত্যার প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘গণমাধ্যমে এসেছে, ভারত আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি গুরুত্ব বুঝে শেখ হাসিনাকে ডিস্টার্ব করা যাবে না। এতে ভারত কি এমন পাপটা করল মির্জা ফখরুল সাহেব? কেন তিনি ভারতের বিরুদ্ধে বললেন- ভারত যদি আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে আমরা সেটা স্বাভাবিক ভাবে নিব না। আসলে আপনারা (মির্জা ফখরুল) স্বাভাবিক ভবে কিছুই মানেন না।’

তিনি বিএনপির উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ভারত যখন মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সাহায্য করেছে, সেটি কী ছিল তাহলে? সেদিন তো ভারতের সেনাবাহিনীর রক্ত ঝরেছে, জীবন দিয়েছে। তাহলে কি ফখরুল সাহেব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের সুরে বলবেন- ভারতের সেনাবাহিনীরা অনুপ্রবেশকারী ছিলেন?’
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি। কিন্তু একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ তার পুরো পরিবারকে হত্যা করা আমরা দেখিনি। সেদিন কিন্তু বাংলার সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে নাই। তাকে হত্যা করেছে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের আদলে দেশ পরিচালিত করতে চেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীরা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি কাজল দাসের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পঙ্কজ দেবনাথ এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।