ছাত্র সংসদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও

SHARE

student cabinetদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন চালু করার পর এবার মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু হতে যাচ্ছে। এই সংসদের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট’। শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করবে। এর ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ, সব বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ‘ভোট-উৎসব’ হবে।

জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সমকালের কাছে এ উদ্যোগের সত্যতা স্বীকার করেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশুকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, নেতৃত্ব বিকাশে প্রতিভা অন্বেষণ, শিখন-শিখানো পদ্ধতিতে সহায়তা করা, ছাত্র ভর্তি ও ঝরে পড়া রোধে সহযোগিতা করা, বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নে শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্যালয়ে এ ধরনের নির্বাচনের ব্যবস্থা রয়েছে।

গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েমে) মিলনায়তনে এ বিষয়ে জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এতে উপস্থিত থেকে সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন ও ব্যানবেইসের পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ এতে উপস্থিত ছিলেন।

২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নির্বাচিত ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ চালু করা হয়। সে অভিজ্ঞতার আলোকে মাধ্যমিক স্তরে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট’ করা হবে। এ কেবিনেটের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের মতোই হবে। প্রধান শিক্ষক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন। ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার ও ভোটকেন্দ্র থাকবে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনার, প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্ট থাকবেন। প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্বাচন সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন।

কেবিনেটে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক, স্বাস্থ্য, সাঁতার ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি, বিদ্যালয়ের আঙিনায় বাগান তৈরিসহ বিভিন্ন গঠনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পরিপত্র জারি হলে চলতি বছরই প্রথমবারের মতো সারা দেশে দুই থেকে আড়াই হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় পরীক্ষামূলকভাবে ‘স্টডেন্টস কেবিনেট’ গঠন করা হবে।

সাংগঠনিক কাঠামো:  প্রতি কেবিনেটে ৭ জন নির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকবে। নির্বাচিতদের বিদ্যালয় উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট ৭টি দায়িত্ব দেওয়া হবে। কেবিনেটের প্রধান যিনি থাকবেন, তাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ বলা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত দু’জন করে মোট ১০ জন সহযোগী সদস্য নির্বাচন করবে। এই সহযোগী সদস্যরা নির্বাচিত কেবিনেটকে সার্বিক কর্মকা পরিচালনায় সহায়তা করবে।

‘স্টুডেন্টস কেবিনেট’ গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ব্যানবেইসের পরিচালক মোহাম্মদ ফসিউল্লাহ সমকালকে বলেন, এ কেবিনেটের নির্বাচিত ৭ জন প্রতিনিধি বিদ্যালয়ের ৭টি প্রধান কার্যক্রম তদারকি করবে। এসব কাজ হলো_ পুস্তক ও শিখনসামগ্রী তদারকি, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কাজে তদারকি, পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, দুপুরের খাবার বণ্টন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং বৃক্ষরোপণ ও বাগান তৈরি করা। নির্বাচিতদের প্রথম সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাদের মধ্যে এসব দায়িত্ব বণ্টন করে দেবেন।