পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট এখনও জমা হয়নি

SHARE

ovijit7সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সময় অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন একাধিক পুলিশ সদস্য। দুর্বৃত্তরা ওই লেখক ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নির্বিঘ্নে চলে গেলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি। এমনকি রক্তাক্ত স্বামীকে উদ্ধারের আকুতি জানালেও সামনে থাকা পুলিশ সদস্যরা এগিয়েও যাননি। তাই ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন।

ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ। ঘটনার প্রায় এক মাস পার হলেও সেই রাতে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল তা বের করতে এখনও ব্যর্থ তদন্ত কমিটি। ঘটনার রাতে পুলিশের ভূমিকা ছাড়াও তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ নিহতের পরিবার।

অভিজিৎ হত্যার আগে ও পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ভূমিকা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মীর রেজাউল আলমের কাছে তদন্তের অবস্থা নিয়ে থেকে জানতে চাওয়া হয়। তবে তিনি তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে কোনো উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। পুলিশের এ কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখায় যোগাযোগ করতে বলেন।

ওই তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান বলেন, তদন্ত কার্যক্রম এখনও শেষ হয়নি। সেদিন পুলিশের ভূমিকা কী ছিল তা তদন্ত চলছে। এদিকে অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এ ঘটনায় মান্নানকে সন্দেহের তালিকায় রাখছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় অভিজিতের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্তত চার যুবককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃত সন্দেহভাজন আসামি শফিউর রহমান ফারাবীকে আরও চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ডিবি।

অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ফারসীমের ভূমিকা রহস্যজনক। ‘জিরো টু ইনফিনিটি’ নামে একটি পত্রিকার উপদেষ্টা ছিলেন ফারসীম। পত্রিকটি জামায়াত প্রভাবিত। এখন তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনে আমরা বুয়েটের সেই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করব। ডিবির ডিসি (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, তদন্ত সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক ও ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়। স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে দুর্বৃত্তের চাপাতির আঘাতে আহত হন অভিজিতের স্ত্রী বল্গগার রাফিদা আহমেদ বন্যা।