জাতীয় ক্রিকেট লিগে ‘পাতানো’ ম্যাচে শিরোপা রংপুরের!

SHARE

walton cচারদিকে যখন টাইগারদের বিজয় কেতন উড়ছে, তখনই ঘরোয়া ক্রিকেটে উঠলো ‘পাতানো’ ম্যাচ খেলার অভিযোগ! তাও আবার যা-তা ম্যাচে নয়, খোদ জাতীয় ক্রিকেট লিগের শিরোপা নির্বাচনী ম্যাচে!
খুলনা বিভাগ ১২০ পয়েন্ট নিয়ে একদিন আগেই খেলা শেষ করে শিরোপা উদযাপনের অপেক্ষায় ছিল। খেলার সমীকরণ ছিল, রংপুর ড্র করলে কিংবা হারলে খুলনা শিরোপা জিততে পারবে। আবার রংপুর যদি জিতে যায় তবে তাদের পয়েন্ট হবে ১২১ এবং তারাই হবে চ্যাম্পিয়ন।
এই সমীকরণকে সামনে রেখে ঢাকা মেট্রোর সঙ্গে চতুর্থ দিনের খেলায় মাঠে নামে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রংপুর। খেলার শেষ ও চতুর্থ দিনে এক ওভার হাতে রেখে ম্যাচ জিতে শিরোপা জয়ের পতাকা ওড়ায় রংপুর।

আপাতদৃষ্টিতে খটকা লাগার কথা নয়। কিন্তু খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা আজ সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ম্যাচটি ‘পাতানো’ অভিযোগ তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। অভিযোগের মূল ভিত্তি হিসে‌‌‌বে জমা দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩৫ মিনিটের একটি অডিও ক্লিপ। চার-পাঁচজন ব্যক্তির কথোপকথনে মনে হতে পারে তারা ঢাকা মেট্রো ও খুলনা টিম ম্যানেজম্যান্টের অংশ।

কী আছে ওই কথোপকথনে? তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সেই কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হল:
ব্যক্তি-১ : সোহেল তো অস্ট্রেলিয়ায়, আমি তার সাথে কথা বলেছি, সে জানতে চেয়েছে ঘটনা ঠিক কি না? আমি বলেছি ঠিক। আমি এও বলেছি যে কোচরা এতে জড়িত নয়, কিছু খেলোয়াড় এর সাথে জড়িত এবং তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সোহেল বলেছে দল চ্যাম্পিয়ন হোক বা না হোক তাতে কিছু আসে যায় না, আমি ঢাকা ফিরে কারা কারা এতে জড়িত তাদের বের করব এবং তারা শাস্তি পাবে।
ব্যক্তি-২: যতোই বলো, মানুষ তো আর তা বুঝবে না, তারা বলবে আমরা এর সাথে জড়িত।

ব্যক্তি-৩: পকেট থেকে কিছু পয়সা খরচ করো, ভিডিওগ্রাফার লাগাও ম্যাচটা শুট করো একদম প্রথম ওভার থেকে। প্রয়োজনে দুটি ক্যামেরা লাগাও। আমি কী করবো জানো? একদম সকালে মাঠে গিয়ে ম্যাচ রেফারিকে বলবো কী ঘটেছে এবং তাকে বলবো আমি আমার খেলোয়াড়দের হ্যান্ডেল করতে পারছি না। যদি ম্যাচ রেফা‌‌‌রি দুই অধিনায়ককে ডেকে বলে যে আমার কাছে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ রয়েছে এবং যখনই সন্দেহজনক কিছু ঘটবে তখনই ম্যাচ বন্ধ হয়ে যাবে। এটি করতে পারি যেন তারা ভয় পায় এবং অন্যায় কিছু করাতে না পারে।

ব্যক্তি-২: না না আমরা ম্যাচ রেফারিকে অবহিত করতে পারি। তিনি ম্যাচ পর্যবেক্ষণ করবেন এবং অধিনায়কদের বলবেন অন্যায় কিছু ঘটলে তা তিনি বিসিবিকে জানাবেন এবং বিসিবি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

ব্যক্তি-৩: ঠিক আছে আমি এটি অবশ্যই করবো।

ব্যক্তি-২: শরিফুল্লাহ প্রথম ইনিংসে ব্যাট করেনি, আমরা দেখেছি আম্প্যায়াররা বেলস ড্রপ করেছে। অর্থাৎ ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছে। শরিফুল্লাহ তো আহত হয়নি তাহলে কেন ব্যাট করল না? ড্রেসিং রুমে এটি নিয়ে তুলকালাম হয়েছে।

ব্যক্তি-৩: বোর্ড কিন্তু শৃঙ্খলার ব্যাপারে অনেক কঠোর। সাকিব পর্যন্ত পার পায়নি।

ব্যক্তি-১: শরিফুল্লাহর ব্যাট না করাটা খুব সন্দেহের কারণ ও আশ্চর্যজনকও বটে।

ব্যক্তি-২: আমি তো ড্রেসিংরুমেই ছিলাম ফিজিও ও অধিনায়ককে জিজ্ঞাসা করেছি কেন সে ব্যাট করলো না? ফিজিওকে বলেছি আহত হলে সোজা ঢাকায় পাঠিয়ে দিতে। আহত খেলোয়াড় ড্রেসিং রুমে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই।

ব্যক্তি-৩: এখন পথ একটি। টিম মিটিংয়ে সবাইকে বলো ম্যাচ ড্র করতে হবে। আর ড্র করলে সবকিছু স্বাভাবিক থাকবে। জিতলে ভালো হয় তবে তা হবে খুব কঠিন।