রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার চূড়ান্ত কাগজে স্বাক্ষর করেছেন। তবে এসব অঞ্চলে রুশ সামরিক বাহিনী আরও পিছু হটেছে বলে জানা যাচ্ছে।
এর আগে এসব অঞ্চলের পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল’ রাখা হবে বলে প্রতিজ্ঞা করেন পুতিন।
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার প্রশ্নে একটা গণভোটের আয়োজন করা হয়- যার মাধ্যমে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক এবং দক্ষিণের খেরসন ও জাপোরিঝাকে নিজেদের অঞ্চলের মধ্যে অন্তর্ভুূক্ত করে রাশিয়া। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এটা স্বীকৃতি পায়নি।
ইউক্রেন বলেছে, তারা লুহানস্ক ওখেরসনের বেশ কিছু গ্রাম পুনর্নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং সম্প্রতি দোনেৎস্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া যেসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেসবের আবার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।
সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো অসংগতি নেই। তারা চিরদিনের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে থাকবে। তারা ফিরে আসবে।’
রাশিয়ায় শিক্ষক দিবসেপুতিন এক ভাষণে বলেন তিনি ‘শান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলোয় উন্নত করবেন’।
কিন্তু স্টেট ডুমা ডিফেন্স কমিটির চেয়ারম্যান আন্দ্রে কারটোপোলভ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন , রাশিয়ার উচিৎ হবে যুদ্ধক্ষেত্রে কী ঘটছে সেটা নিয়ে মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করা। তিনি আরও বলেন রাশিয়ার মানুষ বোকা না।
ইউক্রেনের বাহিনী দক্ষিণ এবং পূর্বে- উভয় দিকে অগ্রগতি করেছে। লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হেইদাই বিবিসিকে বলেছেন বুধবার ওই এলাকার ছয়টা গ্রাম পুনর্নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছে। এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পরে বলেন দক্ষিণাঞ্চলের খেরসনের আরও তিনটি গ্রাম মুক্ত করেছে তারা।
রাশিয়া এখনো রিজার্ভ সৈন্য নিয়ে কাজ করছে। গত মাসে পুতিন তিন লক্ষ মানুষকে ডেকে পাঠান যারা দেশটিতে বাধ্যতামূলক মিলিটারি সার্ভিস সম্পন্ন করেছে।
তিনি একটা ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন যেখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ছাত্র, তাদের মধ্যে অ্যাক্রেডিটেড ইন্সটিটিউশএ প্রথম বারের যারা ছাত্র তারা এবং নির্দিষ্ট কিছু পোষ্ট গ্রাজুয়েট ছাত্র রয়েছে, যারা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন একটা ডিক্রি সই করে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝায়ার পরমাণু পাওয়ার প্লান্ট আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এই পরমাণু কেন্দ্রটি যুদ্ধের শুরু থেকে রাশিয়ার সৈন্যদের দখলে ছিল।
রাশিয়া বলছে, ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু কেন্দ্রটি এখন একটি নতুন কোম্পানি চালাবে। কিন্তু ইউক্রেনের নিউক্লিয়ার অপারেটররা এটাকে নাকচ করে বলেছে, এই সিদ্ধান্ত ‘মূল্যহীন’।
জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচি পর্যবেক্ষক-দল আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন তিনি দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনায় বসবেন। তিনি কিয়েভ ও মস্কোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন।
তিনি প্লান্টের আসেপাশে একটা সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরির চেষ্টা করছেন। পরমাণু কেন্দ্রটির আশেপাশে যুদ্ধের খবরে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়।
খবর বিবিসি