নীরব ঘাতক কিডনি রোগ প্রতিরোধে সবাইকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।
কিডনি এ্যাওয়ারনেস মনিটরিং এ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) ও বাংলাদেশ রেনাল এ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ‘সবার জন্য সুস্থ কিডনি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে ১২ মার্চ বিশ্ব কিডনি দিবস পালন করা হয়।
অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ‘কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য সবার মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি করতে হবে। এ রোগ হল একটি নীরব ঘাতক। কারো শরীরে একবার কিডনি রোগ দেখা দিলে ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। তাই শুধু সচেতন হলেই এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে আয়োজক সংগঠন ক্যাম্পস’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটিরও বেশি মানুষ কিডনি সংক্রান্ত কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫ জন অকাল মৃত্যুবরণ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘কিডনি রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় দেশের পাঁচভাগ মানুষেরও সাধ্য নেই এর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া। তবে একটু সচেতন হলেই ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ভয়াবহ রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে কিডনি বিকল প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ৮টি উপায় বর্ণনা করেন ডা. সামাদ।
উপায়গুলো হল— কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা, ধূমপান থেকে বিরত থাকা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন না করা এবং নিয়মিত কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আগে দিবসটি পালনে বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজক সংগঠন কিডনি এ্যাওয়ারনেস মনিটরিং এ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) ও বাংলাদেশ রেনাল এ্যাসোসিয়েশন রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা বের করে।
শোভাযাত্রাটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন এলাকা ঘুরে পুনরায় ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়।