৯২ রানে হারল বাংলাদেশ

SHARE

srilanka260পরাজয়ের হতাশায় শেষ হলো বাংলাদেশের এমসিজি অভিষেক। বিশ্ব বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই র্দুভাগ্যের রোষানলে পড়ে যায় বাংলাদেশ। স্লিপে এনামুল হক বিজয়ের লাহিরু থিরিমান্নের ক্যাচ ফেলা দিয়ে শুরু। একের পর এক ক্যাচ মিস, রানআউট মিস, স্ট্যাম্পিং মিস, মিস ফিল্ডিং- দৃষ্টিকটু কত কী দেখা গেল।

যার পরিণতিও এলো ম্যাচের ফলাফলে। বৃহস্পতিবার এমসিজিতে শ্রীলঙ্কার কাছে ৯২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে তিলকারত্নে দিলশান ও কুমার সাঙ্গাকারার জোড়া সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ৩৩২ রানের বিশাল স্কোর গড়ে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৪৭ ওভারে ২৪০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দিলশান ম্যাচ সেরা হন।

৩৩২ রানটা অনেক দূরত্বের পথ। কিন্তু পথের শুরুতেই রাস্তা হারিয়ে ফেলার কাজটা ‘দক্ষ’ ভাবে করে গেছেন তামিম ইকবাল। মালিঙ্গার করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড তিনি। কিছুটা পাল্টা আক্রমণ করলেও থিতু হতে পারেননি সৌম্য সরকার। ১৫ বলে ২৫ রান করে ফিরেন তিনি ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে। পরের ওভারেই ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাঝে থাকা মুমিনুল লাকমলের শিকার হন ১ রান করে।

বিজয়-মাহমুদউল্লাহর জুটি থামে ৪৩ রানে। ফিল্ডিংয়ের শুরুতেই দলকে অপয়া’র মুখ দেখানো বিজয় রান আউট হন। তিনি ৪৩ বল খেলে করেন ২৯ রান। দলীয় ১০০ রানে মাহমুদউল্লাহও হেরাথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। তিনি ২৮ রান করেন।

ষষ্ঠ উইকেটে টাইগারদের হয়ে সান্তনার জবাব দিয়েছেন সাকিব-মুশফিকের জুটি। এমসিজির উইকেটটা ব্যাটিং সহায়ক ছিল। দিলশানদের পর তারা দুজনও সেটি দেখিয়েছেন। তাদের ৬৪ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় সাকিব দিলশানের বলে মালিঙ্গার হাতে ক্যাচ দিলে। তিনি ৪৬ রান করেন। সাকিবের বিদায়ের পর খোলসবন্দী হয়ে পড়া মুশফিক ৩৬ রান করে বোল্ড হয়েছেন লাকমলের বলে।

এক প্রান্ত আগলে বাংলাদেশের প্রতিরোধের সলতে জ্বালিয়ে রেখেছিলেন সাব্বির রহমান। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। মালিঙ্গার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে সাব্বির ৬২ বলে ৫৩ রান (৭ চার)করেন। তাসকিনকে এলবির ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ করে দেন মালিঙ্গা। শ্রীলঙ্কার মালিঙ্গা ৩টি, লাকমল-দিলশান ২টি করে উইকেট নেন।

এর আগে ইনিংসের শুরুতেই শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। থিরিমান্নে একাই কয়েকটি সুযোগ দিয়েছেন। যার সবাই নষ্ট করেছে বাংলাদেশ। মাশরাফির করা ইনিংসের চতুর্থ বলে বিজয় সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। ৯ম ওভারে ২২ রানে আবারও মাশরাফির বলে থিরিমান্নের ক্যাচ স্লিপ ও উইকেটকিপারের ফাঁক গলিয়ে যায়। সাব্বিরের করা ২২তম ওভারে স্টাম্পিং মিস করেন মুশফিক। ‘কই’ মাছের প্রাণ থিরিমান্নেকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন রুবেল। ১২২ রানে ১২তম হাফ সেঞ্চুরি করা থিরিমান্নের ক্যাচ ধরেন তাসকিন। তিনি ৫২ রান করেন।

এরপর শুরু হয় দিলশান-সাঙ্গাকারার জুটিতে শ্রীলঙ্কার বড় স্কোর গড়ার গল্প। তাদের জুটিতে আর ভাঙন ধরাতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই লঙ্কানের ব্যাটে পিস্ট হয়েছেন রুবেল-তাসকিনরা। তারা ২৫.৩ ওভারে ২১০ রানের জুটি গড়েন। শেষ ১০ ওভারে ১২৬ রান তোলেন তারা দুজন।

দিলশান খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ৫০ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর ১১৫ বলে তিন অংকের ঘর স্পর্শ করেন তিনি। ২১তম সেঞ্চুরি করা দিলশান ১৪৬ বলে ২২টি চারে ১৬১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৬০ রান করেছিলেন তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে হোবার্টে।

ক্যারিয়ারের ৪০০তম ওয়ানডে ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাঙ্গাকারা। এমন ম্যাচটাকে স্মরুণীয় করে রাখলেন তিনি ২২তম সেঞ্চুরি দিয়ে। ওপেনার তৈরি করা ভিতের সঠিক ব্যবহার করেছেন সাঙ্গাকারা। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন তিনি। ৭৩ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৭৬ বলে অপরাজিত ১০৫ রান (১৩ চার, ১ ছয়) করেন তিনি।