প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচন ছাড়া বর্তমান সংকটের কোনো সমাধান হবে না বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তা যত দ্রুত হবে, ততই সবার জন্য মঙ্গলজনক।
বুধবার টেলিফোনে এএফপিকে ওই সাক্ষাৎকার দেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বিবেকবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ জানেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একটিই মাত্র পথ আছে। তা হলো সবার অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও অর্থপূর্ণ নির্বাচন। যত দ্রুত তা আয়োজন করা হবে, ততই তা সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে। বিলম্ব করা হলে সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আর এ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ জন্য তিনি যে প্রস্তাব দিয়েছেন এর আগে, সে বিষয়ে কোন সাড়া পাননি।
খালেদা জিয়া বলেন, “আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে আলোচনার মাধ্যমে ও সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। আমরা সেটাই চেয়েছি। সব দলের জন্য যাতে সমান ক্ষেত্র (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরি হয় সে জন্য আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও নির্বাচনী আইন নিয়ে কিছু সিদ্ধান্তে আসতে হবে। কিছুদিন আগে আমরা সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্ত তাদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো সাড়া পাইনি।”
অবরোধের কর্মসূচির সময় পেট্রলবোমা হামলা ও মৃত্যুর জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে খালেদা জিয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “এসব সহিংসতার নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে। আমরা খবরের কাগজে পড়েছি, কীভাবে আওয়ামী লীগ অফিসে পাওয়া গেছে পেট্রলবোমা।”
এএফপি তার রিপোর্টে বলেছে, খালেদা জিয়া দাবি করেছেন, এ বছরের শুরু থেকে বিরোধী দলের ১৮ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে বুধবার তার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। তিনি সব দলকেই তাদের কর্মকাণ্ড বিবেচনার আহ্বান জানান। বলেন, দেশের জাতীয় স্বার্থের আরও ক্ষতি হয় এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ করা উচিত।
এএফপির রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর একতরফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ওপর নতুন নির্বাচন দেয়ার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছিল। শেখ হাসিনার ওপর আন্তর্জাতিক চাপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিশ্বসম্প্রদায়ের উচিত সরকারের ওপর কঠোর ও অধিক কার্যকর চাপ দেয়া, যাতে তারা সমঝোতা ও সংলাপে আসে।