আগুনে পুড়ল আরো ৯ প্রাণ

SHARE

bus fire6বিএনপি জোটের অবরোধের মধ্যে গাইবান্ধা ও বরিশালের গৌরনদীতে বাস ও ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলায় আরো নয়জন নিহত ও কমপক্ষে ৩৯ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলায় দুই শিশুসহ নিহত হয়েছে ছয়জন এবং দগ্ধ হয়েছে ৩২ জন। তবে গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে আরো সাতজন আহত হয়।

পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে এবং গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় শিশুসহ চারজন। দগ্ধ ২০ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে মারা যায় দুজন। এদের মধ্যে একজন শিশু এবং ঘটনাস্থলে নিহত হওয়া এক শিশুর মা।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের তুলসীঘাট এলাকার বুড়ির ঘড় নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর থেকে নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি বাস প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে পুলিশের পাহারায় ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথে তুলসীঘাট এলাকার বুড়িরঘর নামক স্থানে ওই বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা।

গাইবান্ধা থেকে পুলিশ-বিজিবি পাহারা দিয়ে ২০-২৫টি গাড়িবহর নিয়ে যাচ্ছিল পলাশবাড়ীতে। ওই গাড়িবহরে ছিল নাপু এন্টারপ্রাইজের বাসটি। পুলিশ-বিজিবি থাকার পরও বাসে পেট্রলবোমা হামলা হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। হতাহত হওয়া সবাই ওই বাসের যাত্রী। তাদের মধ্যে কেউ গার্মেন্ট শ্রমিক, কেউ রিকশাওয়ালা এবং অধিকাংশই ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। কারো কারো সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও ঢাকায় যাচ্ছিল।

গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবু হানিফ জানিয়েছেন, চারজনের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রংপুরে পাঠানোর পর এক শিশু মারা গেছে। পরে সেখানে দগ্ধ আরো এক নারী মারা যান। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছয়জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। যারা এখন গাইবান্ধায় চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদের কারো ২০ শতাংশ, কারো ৩০ শতাংশ, কারো ৫০ শতাংশ এমনকি কয়েকজনের ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে।

এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেসব দগ্ধকে ভর্ত্তি করা হয়েছে, তাদের শরীরের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আটজনকে আটক করেছে।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক এহছানে এলাহী বলেন, “হামলাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”

বরিশালের গৌরনদীতে একটি ট্রাকে পেট্রলবোমায় তিনজন প্রাণ হরিয়েছেন।

গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, ট্রাকটি পোল্ট্রি ফিড নিয়ে মাদারীপুরের দিক থেকে বরিশাল আসছিল। পথে গৌরনদীর বাটাজোর বাজারের দণি পাশে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা ট্রাকে পেট্রোল বোমা মারেন। এতে ট্রাকের চালক, হেল্পার ও একজন লেবার মারা যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে গৌরনদী হাসপাতালে রেখেছেন।