করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে দু’টি প্যাকেজ আমদানি সহায়তা সংশ্লিষ্ট। ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে জিনিস আমদানি করলে কিছু সুবিধা পাবে। মূলত সুদ হারে সুবিধা ভোগ করবে ব্যবসায়ীরা। শুধুমাত্র এই হ্রাসকৃত সুদ হারের কারণেই রাজস্ব আয়ে ভুগতে থাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) করের ক্ষেত্রে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার ধাক্কা খাবে। সবমিলিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে রাজস্ব ঘাটতি লাখ টাকা ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অর্থমন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রণালয় এবং এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ‘রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) আকার বাড়ানো হয়েছে। এই প্যাকেজের মাধ্যমে ‘ব্যাক-টু-ব্যাক’ এলসির আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ইডিএফের বর্তমান আকার ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে ইডিএফ তহবিলে ১৫০ কোটি ডলারের সমপরিমান ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা নতুন করে যুক্ত হবে। ইডিএফ’র বর্তমান সুদের হার হচ্ছে লন্ডন আন্তব্যাংক সুদের হার (লাইবর) এবং এর সাথে ১ দশমিক ৫ শতাংশের যোগফল। ফলে এই সুদের হার হবে ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
প্রণোদনা প্যাকেজে এই সুদের হার শূণ্য ৭৩ শতাংশ কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটির সাথে প্রাক-জাহাজীকরণ পুন: অর্থায়ন কর্মসূচি ঋণ((প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম) নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঋণ সুবিধার সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শতাংশ। এখানেও সুদের হার হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে। এ দু’টি প্যাকেজেই আমদানির ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে ব্যবসায়ীরা। আর এতেই আয় কমবে এনবিআরের।
এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ঠিক রাখতে কয়েকটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দু’টি প্যাকেজে সুদ হার কমানো হয়েছে। এই দুই প্যাকেজের আওতায় ব্যবসায়ীরা কোন জিনিস আমদানি করলে আমদানি ব্যয় কম হবে। ফলে জিনিসের দাম কমবে। আর এ কারণে করও কম দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এতে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম হবে।
তিনি বলেন, গত ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। করোনা পরিস্থিতি আরো দীর্ঘ হলে রাজস্ব ঘাটতি লাখ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে। আর তা হলে এটি হবে সর্বকালের সবচেয়ে বড় রাজস্ব ঘাটতি।