আর মাত্র দুই দিন বাকি বাঙালি জাতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষ ১৪২১-কে বরণ করে নিতে এরই মধ্যে নানা আয়োজনে মেতে উঠেছে দেশবাসী। কর্ম ব্যস্ততার শহর রাজধানীবাসীর মাঝেও নেমে এসেছে বর্ষবরণের আমেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার সকল আয়োজন চলছে ধুম গতিতে। গত এক সপ্তাহ থেকেই বৈশাখী সাজে সেজে রয়েছে রাজধানীর মার্কেটগুলো।
বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের ছোঁয়া লেগেছে নগরের বিপনীবিতানগুলোয়ও। উৎসব প্রিয় তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত বিপনীবিতানগুলো। বৈশাখে নিজেকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে সাজাতে কেনাকাটা সাড়তে ভিড়ছেন সকল শ্রেণীর মানুষজন।
রাজধানীর নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ সকল শপিং মলগুলোতে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় রীতিমত ভিড় জমিয়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো।
বৈশাখে মেয়েদের লাল-সাদা শাড়ির পাশাপাশি রয়েছে নানা ডিজাইনের নজর কাড়া পোশাক। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসেছে বাহারি চুড়ি-মালার পসরা। বাঙালি ললনারা বৈশাখের পোশাকের সাথে মিলিয়ে কিনছে রকমারি সব মালা, চুড়ি, কানের দুল, টিপ, চুলের ফিতাসহ সাজের নানা সামগ্রী।
চুড়ি মেলায় আসা আফসানা রাহমান জানান, “বৈশাখের শাড়ি কেনা শেষ, শাড়ির সাথে মিলিয়ে চুড়ি আর মালা কিনতে এসেছি। শপিং মলের আশে পাশেই চুড়ি-মালার দোকান বসায় কেনাকাটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। দেশীয় ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে কোন কিছুর অপূর্ণতা রাখতে চাই না।”
বৈশাখের রং লেগেছে ছেলেদের মনেও। পিছিয়ে নেই কেনাকাটায়ও। পছন্দের পাঞ্জাবি, ফতুয়া অথবা টি-শার্ট কিনে নিচ্ছেন বৈশাখকে বরণ করতে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির সানরাইজ প্লাজায় বৈশাখের পোশাক কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র সাইফ নাহিদ জানান, “বৈশাখকে কেন্দ্র করে অনেক রুচিশীল পোশাক এসেছে বাজারে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় পন্যের দাম ছাড়ছে না বিক্রেতারা। হাজার টাকার পাঞ্জারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। তবুও কিছু করার নেই, নববর্ষ বলে কথা, নতুন কাপড় চাই-ই-চাই।”
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভাল থাকায় বেচাকেনা ভাল হচ্ছে বলে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরাও। জমজমাট বেচা কেনা করছে পোশাক বিক্রেতারা। গেল বছরের শেষ দিকের হরতাল-অবরোধের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে বলে মনে করছেন পোশাক তারা।
রাপা প্লাজার একজন পোশাক ব্যবসায়ী জানান, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা ভাল। আর বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি মোটামুটি ভাল থাকায় ক্রেতা সমাগম বেশি এবং আমরা বেশ আশাবাদী।”
এদিকে বৈশাখকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকেই বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফলের প্রস্তুতি নিতেই চারুকলায় এখন চলছে মহাযজ্ঞ। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে। চারুকলার ফটকে পা রাখলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে।