সাত বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। যা এগোচ্ছিল পরিণতির দিকে। কিন্তু হঠাৎই তাতে পথের কাঁটা হয়ে বাগড়া দিল মরণঘাতী করোনা ভাইরাস। সেই ‘কাঁটা’ তুলেই শেষমেশ সাত পাকে বাঁধা পড়লেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাঁথির যুবক পিন্টু জানা আর চীনা কন্যা এঞ্জেল পিং। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু। আর চীনের গোয়াং প্রদেশের বাসিন্দা অ্যাঞ্জেল।
করোনাভাইরাসের হাজারও নিয়ম-নিষেধের বেড়াজালে এঞ্জেলের পরিবার চীনে আটকে গেলেও আটকাল না চারহাত এক হওয়া।
সাত বছর আগে ছোটো মামার হাত ধরে চীনে কাপড়ের ব্যবসা করতে গিয়েছিল পিন্টু। সেখানেই পরিচয় অ্যাঞ্জেলের সঙ্গে। শেষমেশ চার হাত এক করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দুই পরিবার। সেই মতো এক মাস আগে বিয়ের দিনক্ষণ পাকা হয়।
চলতি মাসের ৪ তারিখ বিয়ের দিন ঠিক হয়। স্থির হয়, হিন্দু মতেই হবে বিয়ে। সেই মতো সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎই মাঝখান থেকে বাগড়া দেয় মরণঘাতী করোনা ভাইরাস। দিন ১০-১২ আগে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে দুই পরিবারের।
শেষে ঠিক হয়, নির্দিষ্ট দিনেই হবে বিয়ে। কোনো মতে পাত্র ও পাত্রী ভিসা নিয়ে ভারতে চলে আসেন। কিন্তু আটকে পড়ে কনের পরিবার। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার চার হাত এক হলো অ্যাঞ্জেল ও পিন্টুর।
গত মঙ্গলবার পিন্টুর কাঁথি-১ ব্লকের পশ্চিম পারুলিয়ার বাড়িতেই হল বিয়ে। বুধবার ছিল বৌভাত। এঞ্জেল সাজলেন লাল শাড়ি, চেলি, গয়নায়। আর চীন থেকে নবদম্পতিকে মোবাইলের ভিডিও কলে আশীর্বাদ করলেন এঞ্জেলের পরিজনেরা।
সাত বছর আগে কর্মসূত্রে চীনে গিয়েছিলেন। চীনের গোয়াং প্রদেশে জামাকাপড়ের ব্যবসা করেন পিন্টুর মামা। সেখানেই কাজ করতে গিয়েছিলেন পিন্টু ও তার ভগ্নিপতি। গোয়াং প্রদেশের বাসিন্দা এঞ্জেলদেরও পোশাকের ব্যবসা। সেই সূত্রে দু’জনের দেখা-সাক্ষাৎ ও ভাষার বাধা পেরিয়েই প্রেম। তারা ঘর বাধার সিদ্ধান্ত নেন।
মাসখানেক আগে পিন্টু এবং এঞ্জেলের বিয়ের দিনক্ষণ স্থির হয়। ঠিক হয়, বিয়ে হবে কাঁথিতে, হিন্দু মতে। সেই মতো কিছু দিন আগে পিন্টু ও এঞ্জেল কাঁথিতে চলে আসেন। তার পরেই করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে চীন। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেজন্য চীনে বিমান, ট্রেন, বাস পরিষেবায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। আর তাতেই এঞ্জেলের পরিবারের কাঁথিতে আসার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
সূত্র: আনন্দবাজার।