পিএইচডি ডিগ্রি আইন মেনে হচ্ছে কিনা তদন্তের নির্দেশ

SHARE

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আইন মেনে দেওয়া হচ্ছে কিনা তা তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) শিক্ষকের পিএইচডি জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে ঢাবি ভিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আদালত অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন।

রুলে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রির জন্য শিক্ষার্থী বা গবেষকের জমা দেওয়া থিসিস অনুমোদনের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে যাচাইয়ে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং জালিয়াতির রোধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা সচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, ঢাবি ভিসিসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি দেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকনের করা রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার শতকরা ৯৮ ভাগ নকল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার আদালতে রিট আবেদনকারী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের দিকে ‘টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ: অ্যান এক্সপ্লোরেশন অব দেয়ার ইমপ্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ’ শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। তার এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আবু সারা শামসুর রউফ আর সহতত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।

গবেষণায় ৯৮ শতাংশ হুবহু নকলের বিষয়টি নজরে আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে একজন গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভে নিজের একটি গবেষণা থেকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি চিঠি দিয়েছেন সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাস নিলসন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গবেষণার চৌর্যবৃত্তি শনাক্ত করার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সফটওয়্যার টার্নইটইনের মাধ্যমে অভিসন্দর্ভটি যাচাই করে দেখা গেছে, ২০১২ সালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী-গবেষকের জমা দেওয়া একটি ‘স্টুডেন্ট পেপারস’-এর সঙ্গে লুৎফুল কবীরের নিবন্ধের ৯৮ শতাংশ হুবহু মিল রয়েছে। এটিসহ মোট ১৭টি জার্নাল, আর্টিকেল ও গবেষণাপত্রের সঙ্গে নিবন্ধটির বিভিন্ন অংশের উল্লেখযোগ্য মিল পাওয়া গেছে, যেগুলোর সবই লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভের আগে প্রকাশিত হয়েছে।