করোনাভাইরাস : পরীক্ষা করেই বিদেশি ক্যাপ্টেনদের ঢুকার অনুমতি

SHARE

চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়া জাহাজ থেকে নেমে বিদেশি ক্যাপ্টেন-প্রকৌশলী যারা চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করছেন তাদের শতভাগ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। বন্দর গেইটে স্থাপিত ইনফ্রায়েড থার্মোমিটার দিয়ে যাদের জ্বর মাপা হচ্ছে; পরে করোনাভাইরাস লক্ষণসমূহ সনাক্ত করেই বন্দরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

একইসাথে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়া জাহাজগুলোতে করোনাভাইরাস সনাক্তে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু বহির্নোঙরে জাহাজগুলোতে থাকা ক্যাপ্টেন-প্রকৌশলীদের এই ধরনের কোন পরীক্ষার আওতায় আনা হয়নি।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে আসা জাহাজের নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজটি করে থাকে বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। একইসাথে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে আসা যাত্রী-ক্যাপ্টেনদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজটিও করে থাকে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন এই বিভাগ।

জানতে চাইলে বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর এক নম্বর গেইটে ইনফ্রায়েড থার্মোমিটার দিয়ে প্রত্যেক বিদেশি ক্যাপ্টেনদের সনাক্ত করার কাজ হচ্ছে। শুক্রবার থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় শুধু চীন নয়; সবদেশের নাগরিকদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার ১০ জন, শনিবার ৩৬ জন এবং রবিবার ৫৪ জন ক্যাপ্টেন-প্রকৌশলীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছি। সেখানে নিশ্চিত হওয়ার পরই শহরে ঢুকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এই পরীক্ষা করা হচ্ছে।

জেটিতে আসা জাহাজের নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আওতায় আনা হলেও বহির্নোঙরে আসা বিপুল বিদেশি জাহাজে থাকা ক্যাপ্টেন-প্রকৌশলীরা এই আওতার বাইরে থাকছেন। ফলে তাদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

বহির্নোঙরে কেন পরীক্ষা করেন না জানতে চাইলে বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেন, এটি আমাদের আওতার মধ্যে নেই, তাই করছি না। আর সেখানে পৌঁছে পরীক্ষা করার সাপোর্টও দরকার।

এদিকে ঢাকা শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস সনাক্তে আধুনিক থার্মাল স্ক্যানার বসানো হলেও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে এই ধরনের যন্ত্র নেই। চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরেও নেই। কিন্তু চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পরীক্ষা করা হচ্ছে ইনফ্রায়েড থার্মোমিটার দিয়ে।

জানতে চাইলে বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেন, এটি খুব ব্যয়বহুল এবং সবচে আধুনিক; তবে পরিচালনা করাও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই সাময়িকভাবেই ইনফ্রায়েড থার্মোমিটার দিয়ে কাজ করছি; এটি এক ফুট দুর থেকে পরীক্ষা করা যায়। ভালোই কাজ হচ্ছে।

এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেটিতে পরীক্ষা এবং বহির্নোঙরে পরীক্ষাবিহীন অবস্থার মধ্যে রবিবার প্রথম বৈঠক ডেকেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাস আতঙ্কের পর করণীয় নির্ধারণে এটিই প্রথম বৈঠক। আগামীকাল সোমবার সকালে বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরাসরি কর্মরত বন্দর স্বাস্থ্যবিভাগ, ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা, বার্থ অপারেটর, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর, শিপিং এজেন্ট, বন্দর হারবার ও মেরিন এবং বন্দর হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ। সেখানে বেশকিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা নেই; তবে প্রতিরোধেই আমরা কাজ করবো। এজন্য সব স্টেকহোল্ডারদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে বন্দরের প্রস্তুতি অবহিত করা হবে এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ চাওয়া হবে। এরপরই আমরা সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবো।