পিইসি পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারের বিধান বাতিল করায় হাইকোর্টের প্রশংসা

SHARE

প্রাথমিক সমাপনী সনদ (পিইসি) পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীকে বহিস্কারের বিধান বাতিল করায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে গতবছল ১৯ নভেম্বর জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আদালত।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদের বক্তব্য শোনার পর আদালত এ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী বহিস্কারের বিধান বাতিল বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আদালতকে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শেখ শফিক মাহমুদ পুষ্প। বহিস্কারের বিষয়টি আদালতে নজরে আনা আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ আজ আদালতে হাজির হলে আদালত বলেন, আমাদের আদেশ বাস্তবায়ন করা হলে আপনাকে কোর্টে আসতে হতো না। এসময় আইনজীবী শফিক মাহমুদ আদালতকে জানান, আদালত যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বহিষ্কার করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তাদের ফলাফল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বহিষ্কার সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিধিটি বাতিল করা হয়েছে।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার আদালতকে বলেন, সংশ্লিষ্ট বিধিটি মন্ত্রণালয় বাতিল করেছে। এরপরই হাইকোর্ট মামলায় জারিকৃত রুলটি নিষ্পত্তির করে রায় দেন।

এর আগে হাইকোর্ট গত ১৮ ডিসেম্বর এক আদেশে ২০১৯ সালের প্রাথমিক সমাপনী সনদ (পিইসি) পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যেসব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের পরীক্ষা ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নিতে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশে বহিষ্কার করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হয়। এছাড়া পিইসি পরীক্ষায় বহিষ্কার করা নিয়ে রুলের জবাব না দেওয়ায় এবং বহিস্কারের সংখ্যা না জানানোয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। এই আদেশে আজ হাজির হন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ।

এরও আগে হাইকোর্ট গত ২১ নভেম্বর এক আদেশে রুল জারি করেন। রুলে বহিষ্কার করা সংক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা নির্দেশনা কেন অবৈধ ও বাতিল করা হবে না, ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত করা শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুল আজ নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত।

২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর পিইসি পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কারের বিধান করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এই বিধানের ক্ষমতাবলে গত পিইসি পরীক্ষায় ২৪০ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এনিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে গত ১৯ নভেম্বর ‘পিইসি পরীক্ষায় শিশু বহিষ্কার কেন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, এম মাহমুদুল হাসান, গাজী ফরহাদ রেজা ও মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ। এরপর আদালত স্বতপ্রনোদিতভাবে রুল জারি করেন।