যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে আলোচনায় যারা

SHARE

(১) শেখ ফজলে শামস পরশের (২)শেখ ফজলে নূর তাপস। (৩)শেখ ফজলে ফাহিম ও (৪) শেখ ফজলে নাঈম (৫) নজরুল ইসলাম বাবু (৬) বাহদুর বেপারী(৭) মহিউদ্দিন আহমেদ মহি (৮) সুভাষ হালদার (৯) আতাউর রহমান (১০) সুব্রত পাল (১১) সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু (১২) এন আই আহমেদ সৈকত

সম্প্রতি ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে আলোচনায় রয়েছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ অঙ্গসংগঠন যুবলীগ। সংগঠনটিকে নেতিবাচক ধারা থেকে বের করে ইতিবাচক ব্র্যান্ডে যুক্ত করতে চান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই একদিকে চলছে শুদ্ধি অভিযান অন্যদিকে নতুন নেতৃত্বের খোঁজ। সে লক্ষ্যে দেশের রাজনীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী নিজেই পরিচালনা করছেন শুদ্ধি অভিযান।

আগামী ২৩ নভেম্বর সংগঠনটির সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করে দেয়ায় সবার দৃষ্টি এখন যুবলীগে। রাজনীতি পাড়ার মানুষদের সাথে সাধারণ মানুষদেরও কৌতূহলের শেষ নেই। সংগঠনটির এই ক্রান্তিকালে কারা আসছেন নেতৃত্বে?

আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানা, যুবলীগ ঢেলে সাজাতে এবার বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন দলটির হাইকমান্ড। আর অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্বের প্রতিই আস্থাশীল প্রধানমন্ত্রী। এ প্রেক্ষাপটে কয়েকজন তরুণ নেতার নাম উঠে এসেছে আলোচনায়। যারা একাধারে বিশ্বস্ত, প্রতিশ্রুতিশীল ও মেধাবী।

এদিকে, যুবলীগে বয়সের সীমারেখা আরোপের পর বয়ষ্করা নেতৃত্বের দৌড়ে ছিটকে গেলেও আলোচনায় এসেছেন তরুণরা। যারা ভবিষ্যতে সংগঠনটিতে শীর্ষ পদের দাবিদার। নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বয়সের এই নির্ণায়ককে স্বাগত জানিয়ে তারা বলছেন, এর মাধ্যমে যুবলীগ তার অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নতুন দিনের সূচনা করবে।

তবে নেতৃত্বের এই দৌড়ে নেতারা দৃষ্টি রাখছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বি সতীর্থদের বয়স কত সেদিকে। অর্থাৎ বয়স এখন যুবলীগের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্ট। পদপ্রত্যাশীরা একে অন্যের কত বয়স- এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।

যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস উপলক্ষে সংগঠনের নেতারা গণভবনে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি যুবলীগ করার ক্ষেত্রে বয়সের সীমারেখার কথা জানান। ওই বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, যুবলীগের যে জাতীয় কংগ্রেস আগামী ২৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে, তার জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ হয়েছে ৫৫ বছর। মূলত এরপরই যুবলীগের শীর্ষ পদের জন্য যারা প্রত্যাশী তারা খোঁজ নিতে শুরু করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর বয়সের। অর্থাৎ বয়সের সীমানা যুবলীগের রাজনীতিকে নতুন মোড় দিয়েছে।

জানা গেছে, যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনায় থাকা সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশের (৫১) অপর ছেলে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বয়স ৪৯। শেখ সেলিমের ছেলে এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম ও আরেক ছেলে শেখ ফজলে নাঈমের বয়সও ৫৫ বছরের কম। যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজমের বয়স ৫৫ বছর। অন্যদের মধ্যে যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহির বয়স ৫২, সুব্রত পালের ৫০, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের ৫০, সভাপতি বাহাদুর বেপারির ৫৩, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুর ৪৮, ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সৈয়দ আলাউল ইসলাম সৈকত ৪০, ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন আই আহমেদ সৈকতের বয়স ৩৯ বছর।যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু বয়স ৪৩ বছর।

এর মধ্যে , যুবলীগের চেয়ারম্যান পদে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বড় ভাই শেখ মনির বড় ছেলে অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছে হাইকমান্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্র। অন্যদিকে ,যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস দক্ষিণ মেয়র পদে এগিয়ে আছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনা আছেন, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহির বয়স ৫২, সুব্রত পালের ৫০, সভাপতি বাহাদুর বেপারির ৫৩, ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন আই আহমেদ সৈকতের বয়স ৩৯ বছর।যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু বয়স ৪৩ বছর।

এর মধ্যে সরদার আলী মিন্টু বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক আনিসসহ একাধিক দুর্নীতিবাজদের তথ্য ফাঁস করে আলোচনায় আসেন। জানা যায়, তিনি সদ্য সাবেক বহিষ্কৃত যুবলীগের চেয়্যারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়া সত্ত্বেও তাকে দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারেনি। আনিসের কমিটি বাণিজ্যের বাধা হওয়ার কারণে তাকে দুর্নীতিবাজ আনিস যুবলীগের চেয়ারম্যানের কাছ গুটি করে তাকে সরিয়ে দেন।

এছাড়া আরো আলোচনায় আছেন,

নজরুল ইসলাম বাবু: নজরুল ইসলাম বাবু সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আলোচনায় আছেন। তিনি সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এবং নজরুল ইসলাম বাবু রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত আছেন। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

বাহদুর বেপারী: যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী। দলের ভেতরে ছাত্রলীগের সবচেয়ে মেধাবী এবং পরিছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তার।

সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার : আগামীর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার। তিনি এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।তিনি অত্যন্ত সৎ ও পরিছন্ন রাজনীতিবিদ।এবং তৃণমূলে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

মহিউদ্দিন আহমেদ মহি : যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কমিটির প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের সভাপতি। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে অনেক ক্লাবের নাম উঠে এলেও তার ক্লাব ছিল অভিযোগ থেকে মুক্ত।

সুব্রত পাল : সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত পাল। তিনি এর আগে যুবলীগের প্রচার সম্পাদক, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

এন আই আহমেদ সৈকত: ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সহ -সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য । এন আই আহমেদ সৈকতের তৃণমূলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।